একটা গোটা মাস অতিক্রম করলেও যুদ্ধ চলছে অবিরাম গতিতে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সংঘর্ষ থামার কোনও লক্ষণ নেই। একাধিকবার দুই রাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনা হলেও সমাধান সূত্র দুরস্ত। রাশিয়া একদিকে যেমন নিজেদের দাবি থেকে কিছুতেই সরবে না, ইউক্রেনও তেমন কোনও পরিস্থিতিতেই মাথানত করতে চাইছে না। দাঁতে দাঁত চেপে তারা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে পুতিন বাহিনীর সঙ্গে। এখনও পর্যন্ত দুই দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কমবেশি। রাশিয়ার সেনার ক্ষতি হলেও ইউক্রেন বেশিরভাগ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। এই আবহে আরও বড় আশঙ্কা প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
আমেরিকা মনে করছে, রাশিয়া সম্ভবত পূর্ব ইউক্রেনে ১০ হাজার সেনা জওয়ান মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে। এটা যদি সত্যি হয় তবে বড় রকমের চাপে পড়ে যাবে জেলেনস্কি ব্রিগেড। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার কথায়, পূর্বের সামরিক ব্যর্থতার কথা মনে রেখেই এই মুহূর্তে নতুন করে পরিকল্পনা সাজাচ্ছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। তাই ইউক্রেনের জন্য যে তা বড় সমস্যা তৈরি করবে তা বলাই বাহুল্য। আসলে আশঙ্কা, ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে তাদের দেশের মধ্যেই চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলার পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। এমন হলে কোনও দিক থেকেই পাল্টা আক্রমণের সুযোগ পাবে না ইউক্রেনীয় বাহিনী। রাশিয়ার পক্ষে কাজ আরও সহজ হয়ে যাবে। পুতিন বাহিনী শুরু থেকেই ইউক্রেনকে ঘিরে ফেলার একটা চেষ্টা করে আসছে। তাতেই ১০০ শতাংশ সফলতা পাওয়ার প্রচেষ্টা এটি বলে মনে করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে ইউক্রেন থেকে যেটুকু খবর এসেছে তাতে সেখানে নারীদের ওপর ব্যাপক অত্যাচার চালাচ্ছে রাশিয়ান সেনা। যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বারবার অভিযোগ উঠেছিল, রুশ সেনাবাহিনী ইউক্রেনীয় মহিলাদের ওপরে অত্যাচার চালাচ্ছে। তাঁদের অপহরণ করে ধর্ষণ করা হচ্ছে৷ কিন্তু, এবার জানা গিয়েছে, পুতিন বাহিনীর লালসার হাত থেকে নিস্তার পায়নি শিশুরাও। তবে রাশিয়া এই অত্যাচারের দায় নিতে না চাইলেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বিষয়টি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছে৷ খুব তাড়াতাড়ি এই নিয়ে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
যদিও ভারতে এসে রাশিয়ান বিদেশমন্ত্রী দাবি করেছিলেন যে, ইউক্রেনে যা হচ্ছে সেটা আদতে যুদ্ধ নয়। তিনি জানিয়েছিলেন, এটা আদতে কোনও যুদ্ধ হচ্ছে না। যুদ্ধ বলা ঠিক নয়। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর পরিকাঠামোকে নিশানা করা হয়েছে যাতে পরে তা রাশিয়ার জন্য কোনও বাধা না হয়। অন্যদিকে আমেরিকাকে কটাক্ষ করে তাঁর বক্তব্য ছিল, আমেরিকা ভারতের ওপর চাপ দিচ্ছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য। তবে এই ধরণের চাপ তাদের বন্ধুত্বের ওপর কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে না। আমেরিকা আসলে চায় সবাই ওদের নীতি অনুসরণ করুক। কিন্তু সেটা হবে না।