শিলিগুড়ির ‘সাইবার ক্রাইম’ থানায় কাজে ব্যস্ত পুলিশ আধিকারিকেরা। হন্তদন্ত হয়ে হাজির এক ব্যবসায়ী। শেয়ার ট্রেডিংয়ের নামে প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে খুইয়েছেন প্রায় আড়াই কোটি টাকা। যদিও সেই টাকা এখনও উদ্ধার হয়নি। গত এক মাসে শিলিগুড়ি সাইবার প্রতারণা সংক্রান্ত দু’শতাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। শিলিগুড়িতে দায়ের করা অভিযোগ অনুসারে, মাত্র ২০-২৫ দিনে শিলিগুড়ি থেকে প্রায় ২ কোটি টাকা হাতিয়েছে প্রতারকেরা। কিছু টাকা উদ্ধার হলেও তার অঙ্কটা নগণ্যই।
সম্প্রতি রাজ্যের ট্যাব কেলেঙ্কারির ঘটনা সামনে এসেছে। শিলিগুড়িতেও দায়ের হয়েছে এ সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ। আবার সাইবার অপরাধের ধরনও বদলাচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট বানিয়ে টাকা চাওয়া, ওটিপি জেনে টাকা গায়েব করার ঘটনা কয়েক বছর ধরে হয়ে আসছে। কিন্তু শিলিগুড়ির মতো শহরেও এখন শেয়ার ট্রেডিং, কিউআর কোড, ডিজিটাল গ্রেফতারের ফাঁদে পড়ে কোটি কোটি টাকা খোয়াচ্ছেন অনেকেই। এই ফাঁদে বয়স্ক ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী আধিকারিকেরাই বেশি পড়ছেন। শিলিগুড়ি থানার পাশেই সাইবার ক্রাইম থানা। যেখানে রোজ সকাল থেকে লাইন পড়ছে। লক্ষ লক্ষ টাকা খুইয়ে ফেরতের আশায় পুলিশের দ্বারস্থ হচ্ছেন লোকজন। কয়েকজন ফেরত পেলেও বেশিরভাগেরই টাকা ফেরত আনা যাচ্ছে না। সাইবার ক্রাইম থানার এক আধিকারিকের কথায়, রোজ প্রচুর অভিযোগ আসছে। লোকজনকে সচেতন করা হচ্ছে। অপরাধীদের নাগাল পাওয়া তো দূরঅস্ত, এই টাকা কোথায় যাচ্ছে তারই হদিস মিলছে না।
অফিসারেরা জানাচ্ছেন, মোবাইল ব্যবহারকারীদের সচেতনতার অভাবেই মূলত ‘সুযোগ’ পাচ্ছে সাইবার ক্রাইম অপরাধীরা। সরকারি ওয়েবসাইটের গোপন তথ্য ফাঁস, আইডি পাসওয়ার্ড ফাঁসের অভিযোগ ছাড়াও শিলিগুড়িতে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির নথি যাচাইয়ে ফাঁক থেকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। অবৈধ কল সেন্টার ছাড়াও বিভিন্ন সাইবার অপরাধ এবং দুষ্টচক্র তৈরি হচ্ছে। মাটিগাড়া ওয়েবেল আইটি পার্কের প্রধান সুপ্রিয় বসু বলেন, ‘‘তথ্যপ্রযুক্তি পার্কে যে কোম্পানিগুলি কাজ করছে, তাদের নথি বছর বছর যাচাই করা খুব প্রয়োজন। অনেক ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না।’’ শিলিগুড়ি আইটি পার্কেই শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের তরফে একটি সাইবার ক্রাইম শাখা এবং একটি সাইবার ল্যাব হওয়ার কথা ছিল, যা এখনও হয়নি।