বিভিন্ন কারণে রক্তচাপ বাড়তে থাকে। অন্যতম ব্যস্ততা তার মধ্যে, মানসিক অবসাদ, উদ্বেগ, কোনও বিষয় নিয়ে অত্যধিক ভাবনা রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। একটা বয়সের পর এই ধরনের ক্রনিক সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ইদানীং অবশ্য কম বয়সেও অনেকেই উচ্চ রক্তচাপ বশে রাখার ওষুধ খান। রক্তচাপ এক বার বেড়ে গেলে, তা স্বাভাবিক করে তোলা সহজ নয়। বহু কাঠখড় পোড়াতে হয় তার জন্য। রক্তচাপ যদি নিজের খেয়ালখুশি মতো বাড়তে থাকে, তা হলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ে। তাই রাশ টানতেই হবে। তার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ তো খেতে হবেই। তবে ওষুধ খাওয়া ছাড়াও ঘরোয়া উপায়েও রক্তচাপ কমাতে পারেন। তার জন্য শুধু কয়েকটি নিয়ম মেনে চলতে হবে।
শারীরিক কসরত: ওজন কমানো বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অবশ্যই নিয়মিত শরীরচর্চাও প্রয়োজন। তবে উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে যাঁদের, তাঁদের প্রত্যেক দিন অন্তত ৩০ থেকে ৪০ মিনিট শরীরচর্চা করা আবশ্যিক। যত কার্ডিয়ো করবেন, তত রক্ত চলাচল বেশি হবে, তত হৃদ্যন্ত্র সুস্থ থাকবে। হৃদ্রোগের আশঙ্কা কমবে। হাঁটাচলা করলেও উপকার মিলবে।
পটাশিয়াম খান: উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের বেশি করে খেতে হবে পটাশিয়াম। রক্তচাপ কমাতে পটাশিয়াম অত্যন্ত জরুরি পুষ্টি। তাই পটাশিয়ামে সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে। কলা, অ্যাভোক্যাডো, টম্যাটো, রাঙা আলু, বাদাম, দইয়ের মতো খাবার নিত্য খাদ্যতালিকায় রাখুন।
ধূমপান কমান: রক্তচাপ যাঁদের বেশি ধূমপান, মদ্যপান অবশ্যই কমিয়ে ফেলুন। ধূমপান এবং মদ্যপানের প্রতি আসক্তি কমাতে না পারলে, পরিমাণ যেন সীমিত হয়। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, অ্যালকোহল প্রায় ১৬ শতাংশ রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। নিকোটিনও মারাত্মক ক্ষতি করে রক্তনালির। তাই এগুলি এড়িয়ে চলাই ভাল।
নুন কম খাওয়া: সাধারণ মানুষের প্রত্যেক দিন ৫ গ্রামের বেশি নুন খাওয়া উচিত নয়। সেখানে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জীবন থেকে নুনের স্বাদ বাদ দিয়ে দিতে পারলেই শ্রেয়। বাইরের জাঙ্ক খাবার, ভাজাভুজি, বিস্কুট-চানাচুরেও লবণ থাকে। তাই যে কোনও খাবার খাওয়ার আগে সাবধান হন।
কার্বোহাইড্রেট এড়িয়ে চলুন: কার্বোহাইড্রেট কম খান। ময়দা, চিনি, সাদা ভাত, কেক, প্যাটি, বার্গার, সাদা পাঁউরুটির মতো খাবার খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন। এমনি আটার রুটির বদলে জোয়ার, বাজরা, রাগির রুটি খেতে পারেন। সাধারণ ইডলি-দোসার বদলে সুজি বা রাগির ইডলি খান। হোল গ্রেনের আটা, পাউরুটি খেলে ভাল। ওজন যত নিয়ন্ত্রণে রাখবেন, তত রক্তচাপও কম থাকবে।