গত একবছর ধরে রাজ্যে কোভিড সংক্রমন, লকডাউন, অর্থনতিক সংকট বহু কিছুর ঝড় বয়েছে৷ তবুও এতো ঝড়ের মাঝেও সময়ের আগেই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলেছে আফগারি দফতর৷ প্রসঙ্গত, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ১২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের টার্গেট রাখা হয়েছিল৷ ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই সেই লক্ষ্যমাত্র ছুঁয়ে ফেলে আবগারি দফতর৷ ফলে চলতি আর্থিক বছরের শেষে লক্ষ্যের চেয়ে অনেক বেশি আয় হবে বলেই আবগারি দফতর সূত্রে খবর৷
চলতি অর্থবর্ষে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেশি হলেও তা ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের রেকর্ড ছুঁতে পারবে না। ওই অর্থবর্ষে আবগারি দফতরের সামনে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল ৫৭৮১.৩৮ কোটি টাকা। পরে তা কমিয়ে ৪ হাজার ৭৮৮ কোটি করা হয়। কিন্তু বছর শেষে দেখা যায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ওই বছরে আবগারি দফতরের মোট আয় ছিল ৯৩৪০.০৫ কোটি টাকা।
আবগারি দফতরের কর্তাদের দাবি, গত পাঁচ বছর ধরে নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙেছে আবগারি দফতর৷ বেড়েছে আয়৷ ফলে আবগারি দফতরের উপর রাজ্যের আর্থিক ব্যবস্থার ভরসাও অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষের দিকে তাকালেও দেখা যাবে বছরের শুরুতে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে ব্যর্থ হয়েছিল দফতর। কিন্তু ২০১৭ থেকে পরিস্থিতি বদলে যায়৷ ওই বছর জানুয়ারি মাস থেকেই রাজ্যে দেশি ও বিদেশি মদের মূল ডিস্ট্রিবিউটার হিসেবে কাজ শুরু করে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট বেভারেজেস কর্পোরেশন (বেভকো)।
এর পর থেকেই লাফিয়ে বাড়তে থাকে আবগারি দফতরে আয়৷ প্রথম বছর ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে দফতরের রাজস্ব আয় ছিল ৯৩৪০.০৫ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে আয় বেড়ে হয় ১০,৫৯০.৭২ কোটি টাকা। অথচ একটা সময় ছিল যখন ৫০০ কোটির লক্ষ্যমাত্রাও ছুঁতে পারেনি আবগারি দফতর৷ কিন্তু এখন প্রতি বছরই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে রাজস্ব৷
আবগারি দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘আমরা মানুষকে মদ খেতে উৎসাহ দিচ্ছি তেমনটা কিন্তু নয়৷ গত কয়েক বছরে রাজ্যে অবৈধ মদ বিক্রি উল্লেখযোগ্য ভাবে কমানো সম্ভব হয়েছে। যার জেরেই বৈধ মদ বিক্রির এই বৃদ্ধি৷ দফতরের এই উদ্যোগে দুটি লাভ হয়েছে৷ এক দিকে মদ থেকে বিষক্রিয়ার মতো ঝুঁকি কমেছে৷ অন্যদিকে সরকারের কর ফাঁকি দেওয়াও কমেছে।’’