তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ফেরার পর থেকে রাজ্যের এবং রাজ্যবাসীর উন্নয়নের দিকেই সব চেয়ে বেশি নজর তাই। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি নজর উন্নয়নে শিল্পে। রাজ্যের শিল্প উন্নয়নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে একাধিক ঘোষণা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধারে একাধিক শিল্পতালুকে বিনিয়োগ তো অন্যদিকে শিল্পবান্ধব নয়া নীতির ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। পানাগড়ে একটি পলিফিল্ম কারখানার ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দেউচাপচামি এলাকায় একটি নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদন কারখানার কথা ঘোষণা করেন তিনি। এর পরই মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, “বাংলায় বিনিয়োগ করুন। আমাদের সরকার শিল্পের পাশে আছে। এ রাজ্য শিল্পে একনম্বর হবেই। এবার শিল্পই টার্গেট আমাদের।”
- পাশাপাশি জানিয়ে দিলেন, ওয়েস্টবেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল বোর্ড গঠনের কথা। সেই বোর্ডের মাথায় রয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। বোর্ডটি শিল্পকর্তাদের আবেদন খতিয়ে দেখার পাশাপাশি শিল্প গড়ার ছাড়পত্র দেবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
- ইথানল প্রোডাকশন প্রোমোশন পলিসি চালু করল রাজ্য। বায়ো ফুয়েলের মূল উপাদান ইথানল। খুদকুঁড়ো অর্থাৎ ভাঙা চাল থেকে তৈরি হয় এই ইথানল। তাই চাষিদের থেকে কিনে নেওয়া হবে সেই ভাঙা চাল। যাতে ভাঙাচাল আর কম দামে বিক্রি করতে না হয়। সেই খুদকুঁড়ো দিয়ে তৈরি হবে বায়ো ফুয়েল। এই জ্বালানি তৈরি করতে গ্রামেগঞ্জে প্রচুর কারখানা গড়ে উঠবে। কাজ পাবেন অন্তত ৪৮ হাজার মানুষ। এই শিল্পে এক বছরে দেড় হাজার কোটি বিনিয়োগ হবে বলে আশা মুখ্যমন্ত্রীর।
- মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “দেউচাপচামি এলাকায় বিদ্যুৎ উদপান কেন্দ্রের প্রথম পর্যায়ের জমি সরকারের কাছেই আছে। আমরা চাকরি দেব, স্কুল-কলেজ, জল, রাস্তা, হাসপাতাল বাড়ি সব করে দেব। মোট ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হচ্ছে এই প্রকল্পে। লক্ষাধিক কর্মসংস্থানও হবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে।
- আগামী ৫ বছরে ৪০ হাজার মেগাওয়াটের ডেটা সেন্টার গড়ে তোলা হবে এ রাজ্যে। এই ডেটা সেন্টার শুধু বাংলা নয়, প্রতিবেশী দেশ নেপাল, ভূটান, বাংলাদেশকে সাহায্য করবে। বিনিয়োগ হবে ২০ হাজার কোটি বিনিয়োগ। তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ২৪ হাজার যুবক-যুবতী চাকরি পাবেন।
- দ্রুত তাজপুর বন্দর চালু করা হবে। ফলে এই বন্দর থেকে আমদানি-রপ্তানির পরিমান বাড়বে।
- রঘুনাথপুরে হচ্ছে শিল্পতালুক। নাম জঙ্গলমহল সুন্দরী। এক্ষেত্রে বিনিয়োগ হবে ৭২ হাজার কোটি। মিলবে লক্ষ-লক্ষ চাকরি।
- ২ বছরের মধ্যে অণ্ডালকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বানানো হবে। বাজেটে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। গোটা রাজ্যে প্রায় ৩০টি হেলিপ্যাড তৈরি হয়েছে।
- অমৃতসর-ডানকুনি ফ্রেট করিডোর তৈরি হচ্ছে। বিনিয়োগ হবে ৭২ হাজার কোটি টাকা।
- অশোকনগরে তেলপ্রকল্পের কাজ চলছে। সেখানেও কর্মসংস্থান হবে।
- বানতলায় লেদার কমপ্লেক্স তৈরি হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশ থেকে বেশিরভাগ চর্মশিল্প এরাজ্যে চলে এসেছে। ৫ লক্ষের বেশি কর্মসংস্থান হবে।
- গত কয়েক বছরে রাজ্যের শিল্পে ১ লক্ষ কোটি বিনিয়োগ হয়েছে।