আচমকা বিপদের সংকেত৷ পুরীর জনন্নাথ মন্দিরে বিদপের পদধ্বনি৷ জগন্নাথ মন্দিরের জন্য যে কাজ শুরু হয়েছে, তা থেকেই ক্ষতি হতে পারে মন্দিরের৷ সতর্ক করল আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া। ওডিশা সরকারকে পাঠানো হল সতর্কবার্তা৷
ভারতের চার ধাম তীর্থক্ষেত্রগুলির মধ্যে অন্যতম পুরীর এই জগন্নাথ মন্দির৷ কথিত আছে, ভগবান বিষ্ণুর স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পবিত্র মন্দির স্থাপন করেছিলেন রাজা ইন্দ্রদুম। পুরীর সেই জগন্নাথ মন্দিরকেই হেরিটেজ সেন্টার হিসাবে গড়ে তোলা হচ্ছে৷ শুরু হয়েছে হেরিটেজ করিডর প্রকল্পের কাজ৷ আর সেই কাজের জন্যেই যত বিপত্তি৷
আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এএসআই) জানিয়েছে, করিডর প্রকল্পের কাজে ভারি যন্ত্রপাতি দিয়ে মন্দিরের সামনে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলছে৷ সেই কম্পন থেকে মন্দিরের দেওয়ালে ফাটল ধরার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে৷ জগন্নাথ মন্দিরে করিডর তৈরির কাজ খতিয়ে দেখতে এসে এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করেন এএসআই-এর কর্তারা৷
তবে পুরীর বিজেডি সাংসদ পিনাকি মিশ্র লোকসভায় জানিয়েছেন, এনএমএ-র ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ পাওয়ার পরেই মন্দিরে হেরিটেজ করিডর তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে। নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ খারিজ করেছেন পুরীর জেলাশাসক সমর্থ্য ভার্মাও।
পুরীর মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অনেক রহস্য৷ যাঁকে বিজ্ঞান দিয়ে মেলানো যায় না৷ মানুষের বিশ্বাস, এ সবই জগন্নাথ দেবের লীলা৷ যেমন- • পুরীর মন্দিরের চূড়ায় থাকা ধ্বজাটি সর্বদা হাওয়ার গতিপথের বিপরীতে ওড়ে৷ এর কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা মেলেনি৷
• মন্দিরের চূড়ায় স্থাপিত রয়েছে একটি সুদর্শন চক্র৷ এই চক্রটি ২০ ফুট উঁচু এবং ওজনে ১ টন৷ অদ্ভূতভাবে পুরী শহরের যে কোনও প্রান্ত থেকে এটি দেখতে পাওয়া যায়৷ এর পিছনে কোন ইঞ্জিনিয়ারিং তত্ত্ব রয়েছে, তা আজও রহস্য৷ চক্রটির দিকে তাকালেই মনে হবে আপনার দিকে তাকিয়ে রয়েছে৷
• শুনতে অবাক লাগলেও, পুরীর মন্দিরের উপর দিয়ে কোনও পাখি উড়ে যায় না৷ ওড়ে না বিমান৷ যার সঙ্গে অন্যান্য মন্দিরের কোনও মিল নেই৷ প্রকৃত অর্থেই এই মন্দির যেন নো ফ্লাইং জোন৷
• পুরীর মন্দিরের কাঠামো এমন ভাবে তৈরি হয়েছে যে, দিনের কোনও সময়েই এর ছায়া দেখা যায় না৷ যা সত্যিই বিস্ময়৷ এটা কোনও ইঞ্জিনিয়ারের কারিকুরি, নাকি দৈবিক ক্ষমতা, তা এক রহস্য৷
• জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশের চারটি দরজা রয়েছে৷ মূল প্রবেশপথ হল সিংহদরজা। অদ্ভূত ভাবে সিংহদরজা দিয়ে প্রবেশের সময় ঢেউয়ের শব্দ শুনতে পাবেন। কিন্তু, একবার সিংহদরজা অতিক্রম করার পর ফের পিছন ঘুরে একই দিকে যখন যাবেন, তখন আর ঢেউয়ের শব্দ শুনতে পাবেন না। এমনকী মন্দিরের ভিতরে কোথাও ঢেউয়ের আওয়াজ শোনা যায় না৷
• পুরীর মন্দিরে কখনও প্রসাদ নষ্ট হয় না৷ দিনবিশেষে মন্দিরে ২০০০ থেকে ২০০০০ ভক্ত সমাগম ঘটে৷ কিন্তু সারা বছর মন্দিরে একই পরিমাণ প্রসাদ রান্না করা হয়৷ এর পরেও কোনও দিন প্রসাদ কম পড়ে না বা ফেলা যায় না৷