একে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি, তার মধ্যে ঊর্ধ্বমুখী বাজার দর নাজেহাল পরিস্থিতি বঙ্গবাসীর। এই মুহূর্তে সপ্তাহ শেষের ঠিক আগেই আগুনের দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে মুরগির মাংস। দাম বাড়তে বাড়তে এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে আগামী রবিবারের দুপুরে পাতে মাংস পড়বে কিনা সেই চিন্তাতেই মাথায় হাত পড়েছে মধ্যবিত্তের। চলতি সপ্তাহের প্রথম থেকেই আকাশছোঁয়া দরে বিক্রি হয়েছে মুরগির মাংস। বাজারের বাকি জিনিসের অগ্নিমূল্য দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চিকেনও চলতি সপ্তাহের প্রথমেই পৌঁছে যায় আড়াইশো টাকা প্রতি কেজিতে। পরে কলকাতার বিভিন্ন বাজারে ২৭০ টাকা প্রতি কেজিতেও বিক্রি হতে শুরু করে মুরগির মাংস। বর্তমানে এক এক জায়গায় এক এক দরে বিক্রি হচ্ছে মুরগির মাংস। বতবে সেক্ষেত্রে কোনওটাই আড়াইশোর কম নয়। পরিস্থিতি এমনই যে, মনে করা হচ্ছে রবিবার বিক্রি একটু বাড়লেই মুরগির মাংস ছোঁবে তিনশোর গণ্ডি।
বৃহস্পতিবার কলকাতার পাইকারি বাজারগুলোতে মুরগির মাংস বিক্রি হয়েছে ২৫০ থেকে ২৬৫ টাকা কেজি দরে। শহরতলিতেও ইতিমধ্যেই মুরগির মাংসের দাম আড়াইশোর গণ্ডি পার করেছে। দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে মুরগি ব্যবসায়ীদেরই একাংশ জানাচ্ছেন রবিবার গ্রাহকের সংখ্যা বাড়লে যখন আমদানি বাড়াতে হবে তখনই দাম বেড়ে মুরগির মাংস পৌঁছোবে ৩০০ টাকা প্রতি কেজিতে। মুরগির মাংসের এমন আকাশছোঁয়া দামে ইতিমধ্যেই কমেছে গ্রাহকের সংখ্যা। আগামী দিনে তা আরও কমবে।
চলতি বছরের আগেও ২৫০-এর গণ্ডি পার করেছে মুরগির মাংস। মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত কলকাতার বিভিন্ন বাজারে মুরগির দাম ২৫০ টাকা প্রতি কেজিতে বিক্রি হয়েছে। তখন থেকেই আস্তে আস্তে কমেছে বাজারের চাহিদা। এমতাবস্তায় মুরগির মাংস সাড়ে তিনশো টাকার গণ্ডি পার করে তাহলে যে চিকেন কেনা কার্যত অসম্ভব হয়ে যাবে মধ্যবিত্তের তা ভালোই বুঝতে পারছে সকলে।
তবে এখন প্রশ্ন হল কেন বাড়ছে মুরগির দাম? ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মদন মাইতি মুরগির মাংসের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে এদিন বলেন, ‘করোনার আগের তুলনায় করোনার পরে মুরগির পোল্ট্রির খাবারের দাম ও পরিবহনের দাম ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এক ধাক্কায় এতটা বৃদ্ধি পাওয়ায় পোল্ট্রি উৎপাদন ব্যয় রীতিমতো আকাশছোঁয়া হারে বেড়েছে। ফলে চাষিরা খরচ চালাতে হয় দাম বাড়িয়েছে নয়তো উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছেন। এরে বাজারে যোগান কমছে মুরগির মাংসের। আর আমদানি কমে যাচ্ছে বলেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মাংসের দাম।’ তার কথায় চাষীদের বাঁচাতে হলে চিকেনের দাম তিনশো টাকা হওয়া উচিত। মুরগির মাংসের দাম না বাড়লে চাষিরা কোনওমতেই বাঁচবে না। সেই সঙ্গে তিনি সরকারের বিরুদ্ধেও একরাশ অভিযোগ জানিয়ে বলেন, ‘দেশে পৌলট্রি ফিড কমে গিয়েছে জেনেও সরকার বিদেশ থেকে আমদানি করার অনুমতি দিচ্ছে না। ফলে দাম বাড়ছে উত্তরোত্তর।’