সম্প্রতি বাংলায় উদ্ধার কয়েক কোটি কোটি টাকা৷ গ্রেফতার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ এরই মাঝে আবার একবার বিপুল নগদ অর্থ সহ বাংলা থেকে গ্রেফতার ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেসি বিধায়ক।
শনিবার সন্ধ্যায় হাওড়ায় টাকা সহ হাতেনাতে ধরা পড়েন তাঁরা৷ এর পর থেকেই ক্রমশ রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে৷ কোথা থেকে এত টাকা এল, কার নির্দেশে তা কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল? এই রহস্য উদঘাটনে নামতে চলেছে সিআইডি৷
ইতিমধ্যেই তিন কংগ্রেসি বিধায়ককে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ এই ঘটনায় কংগ্রেস যখন মহারাষ্ট্রের ছায়া দেখছে, তখন তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই ঘটনায় নাম জড়াল অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার৷ ঝাড়খণ্ডেরই এক কংগ্রেস বিধায়ক কুমার জয়মঙ্গল সিং থানায় অভিযোগ করেছেন, হাওড়া পুলিশের হাতে ধৃত তিন কংগ্রেস বিধায়ক তাঁকে কলকাতায় আসতে বলেছিলেন।
ঠিক ছিল, কলকাতা থেকে তাঁকে নিয়ে গুয়াহাটিতে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার কাছে যাবেন তাঁরা৷ উদ্দেশ্য, ঝাড়খণ্ডে জেএমএম-কংগ্রেস জোট সরকার ফেলে বিজেপি-কে ক্ষমতায় আনা৷ এর আগে পাঁচলায় ধৃত তিন বিধায়ককে সাসপেন্ড করে এই আশঙ্কাই প্রকাশ করেছিল কংগ্রেস৷
তাঁদের দাবি ছিল, ঝাড়খণ্ডে কংগ্রেসি বিধায়কদের টাকার টোপ দিয়ে সরকার ফেলার ছক কষছে বিজেপি। কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, ঝাড়খণ্ডেও মহারাষ্ট্র-মডেল আমদানি করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে বিজেপি।
ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে ‘অপারেশন লোটাস’ (বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচিত সরকার ফেলে বিজেপি সরকার গঠনের চক্রান্তকে এই নামেই অভিহিত করেন বিরোধীরা)৷ তাঁর দাবি ‘‘বিধায়ক প্রতি ১০ কোটি টাকা দর হাঁকছে বিজেপি। সেই সঙ্গে ফেলা হচ্ছে মন্ত্রিত্বের টোপও।’’ এর নেপথ্যে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার হাত রয়েছে বলেও কংগ্রেসের অভিযোগ৷
কংগ্রেসের এই অভিযোগের পর অবশেষে প্রতিক্রিয়া জানালেন হিমন্ত৷ তাঁর বিরুদ্ধে আনা ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ উড়িয়ে তিনি জানালেন, কংগ্রেসের অনেক শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক আছে। তবে সেটা ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক নয়।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কংগ্রেসের অনেক বড় নেতাও আমার সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন। যদিও আমরা রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করি না।’’ সেই সঙ্গে তিনি এও বলেন, ‘‘আসলে ওই দলে ২২টা বছর কাটিয়েছি৷ যোগাযোগ থাকাটাও স্বাভাবিক৷ কেন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনল জানি না৷’’ উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন হিমন্ত।
যদিও নিজের অভিযোগপত্রে জয়মঙ্গল দাবি করেছেন, তাঁকে ১০ কোটি টাকার টোপ দেওয়া হয়েছে৷ শুধু তাই নয়, বিজেপি সরকার গঠিত হলে তাঁকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদ দেওয়া হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে৷ গোটা বিষয়টিই বিজেপি নেতৃত্বের গোচরে রয়েছে বলেও তিনি জানান। জয়মঙ্গল লিখেছেন, ‘জামতাড়ার বিধায়ক ইরফান আনসারি আমাকে জানিয়েছেন, দিল্লিতে বিজেপি নেতৃত্ব প্রতিনিয়ত হিমন্তের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাঁদের আশীর্বাদ রয়েছে হিমন্তের সঙ্গে।’