অশান্ত পরিবেশেই কাটলো পুরসভা ভোট

আশা করা হয়েছিল করা নির্বিঘ্নেই শান্তি মতো সম্পন্ন হবে কলকাতা পুরসভা ভোট৷ কিন্তু কলকাতা পুরভোটে সকাল থেকেই দফায় দফায় উত্তেজনা৷ বিরোধী দলের এজেন্ট বসতে না দেওয়া থেকে হুমকি দেওয়ার মতো অভিযোগ উঠেছে ভুরি ভুরি৷ কংগ্রেস এজেন্টকে মেরে বার করে দেওয়া হয় ব্রেবোর্ন রোডে জৈন স্কুলের বুথ থেকে৷ কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের মারপিটে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে৷ আবার ৯টি বুথে এজেন্টই দিতে পারেননি সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন নির্দল প্রার্থী তনিমা চট্টোপাধ্যায়৷ আবার সিপিএম-এর মহিলা এজেন্টকে মারধরের অভিযোগে উত্তপ্ত হয়েছে বেলেঘাটা৷ 

শুধু এজেন্ট বসা নিয়ে তাণ্ডবই নয়৷ এদিন সকালে দেখা যায় মানিকতলায় একটি হাসপাতালের ছাদে হাড়ি হাড়ি বিরিয়ানি তৈরি হচ্ছে৷ অভিযোগ, ভোটারদের প্রভাবিত করতে গোটা উত্তর কলকাতায় ওই বিরিয়ানি পৌঁছে দেওয়া হল বিজেপি কর্মীদের৷ সেই বিরিয়ানি আটকায় তৃণমূল৷ আবার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী সজল ঘোষের নির্বাচনী কার্যালয়ে অবৈধ জমায়েত করার অভিযোগে তাঁর কার্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ কলকাতা পুরভোটে রক্তও ঝরেছে খান্নায় বোমা ফেটে পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন এক ব্যক্তি৷ ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডেও বোমা ফাটে৷ এমনকী আক্রান্ত হয়েছেন খোদ বিজেপি প্রার্থী মীনাদেবী পুরোহিত৷ অবৈধ জমায়েতে বাধা দিতে গেলে তাঁর উপর আক্রমণ করা হয়৷ তাঁর শাড়ি ও ব্লাউজ ছিঁড়ে তাঁকে লজ্জিত করা হয়৷

তার উপর সকাল থেকেই ছাপ্পা ভোট, বুথ দখলের অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা৷ এক যোগে অভিযোগ জানায় বাম-কংগ্রেস ও বিজেপি৷ পুরভোটে বিরোধীদের এই ঐক্য ছিল বেনজির৷ আবার ছাপ্পা ভোটের অভিযোগে বাঘাযতীন মোড়ে রাস্তা অবরোধ করেন বাম প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা৷ এরই মাঝে খিদিরপুরে আক্রান্ত হন বাম প্রার্থী ফৈয়াজ আহমেদ খান৷ ভাঙচুর চালানো হয় তাঁর গাড়িতেও৷ এর পরেই খিদিরপুর মোড়ে রাস্তায় অবস্থান বিক্ষোভে বসেন বাম প্রার্থী৷ 

এদিকে, এমএলএ হোস্টেলের গেটে তালা ঝোলানো হয়৷ ভিতরে আটকে পড়লেন ৮ বিজেপি বিধায়ক৷ এর মধ্যে পুরুলিয়ার ৫ জন এবং বাঁকুড়ার ৩ জন বিধায়ক রয়েছেন৷ বেরতে না পেরে এমএলএ হোস্টেলের গেটের সামনে বসেই বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা৷ অন্যদিকে দলীয় বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করার সময় ঘেরাও করা হয় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সল্টলেকের বাড়ি৷ যদিও এদিন ভোট দিতে এসে বিরোধীদের যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ভোট শান্তিপূর্ণ৷ লড়াই দিতে না পেরে ড্রামা করছে বিরোধীরা৷ প্রসঙ্গত, বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৬৩.৩৭ শতাংশ৷ জয়েন্ট সিপি হেডকোয়ার্টার শুভঙ্কর সিনহা সরকার জানিয়েছেন, পুর ভোটে বিভিন্ন ঘটনায় মোট ১৯৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Leave a Reply