থমকে গেলো কালজয়ী সুরসৃষ্টির জীবন

থেমে গেলো সংগীতের সুর। প্রয়াত হলেন কিংবদন্তি সন্তুরবাদক শিবকুমার শর্মা। মঙ্গলবার মুম্বইয়ে নিজ বাসভবনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় শিল্পীর। বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। শিবকুমারের জন্ম জম্মুতে। পরে তিনি মুম্বই চলে আসেন৷ সেখানেই ছিল তাঁর মূল কর্মক্ষেত্র৷ উত্তর ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে ‘সন্তুর’ নামে বাদ্যযন্ত্র দিয়ে শুরু হয় তাঁর সঙ্গীত সফর। এর আগে ‘সন্তুর’-এর তেমন মর্যাদা ছিল না। এই বাদ্য যন্ত্রটিকে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের মূল ধারায় নিয়ে আসার কৃতিত্ব কিন্তু শিবকুমারেরই। হরিপ্রসাদের সঙ্গে জুটি বেঁধে বলিউডের মূল ধারার ছবিতে কালজয়ী সুরসৃষ্টি করেছেন শিবকুমার। তার মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য ছবি ‘সিলসিলা’। পুত্র রাহুলও বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে সন্তুরবাদক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন৷ 

১৯৩৮ সালের ১৩ জানুয়ারি জম্মুর সম্ভ্রান্ত সঙ্গীতজ্ঞ পরিবারে জন্ম হয় শিবকুমার শর্মার। তাঁর বাবার নাম উমা দত্তশর্মা৷ তিনি ছিলেন নাম করা সঙ্গীত শিল্পী। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে বাবার কাছেই শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন শিবকুমার৷ উমা দত্তশর্মা সন্তুর নিয়ে দীর্ঘ গবেষণা করার পর সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি তাঁর পুত্রকে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সন্তুরবাদক হিসেবে গড়ে তুলবেন। এই চিন্তা থেকে শিবকুমারকে মাত্র তেরো বছর বয়স থেকে সন্তুরের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে ‘সন্তুর’ নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন শিবকুমার নিজে। জম্মু থেকে শিবকুমার চলে আসেন মুম্বই। এর পর গোটা বিশ্বে ঘুরে বেরিয়েছেন তিনি৷ তবে তাঁর শিখর ছিল মুম্বইয়ে৷ সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি-সহ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বহু পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন শিবকুমার। ২০০১ সালে তাঁকে পদ্মবিভূষণ সম্মান দেওয়া হয়। এ ছাড়াও তাঁকে আমেরিকার সম্মাননীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়েছিল৷