১০ বছর আগের ঘটনা, অনেকটা সময় কেটে গিয়েছে তাও এখনো তার বিভীষিকাময় ছবি তারা করে বেড়ায় মানুষকে। আবারও এলো হুমকি ফোন। বিভীষিকাময় সেই ২৬/১১-এর ধাঁচে আবারও হামলা হবে রাজধানীর বুকে! এই হুমকি পেল মুম্বই পুলিশ।
গত সপ্তাহের শনিবার অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে হোয়াটসঅ্যাপে এমন হুমকি পেয়ে কার্যত নড়েচড়ে বসেছে মুম্বই পুলিশ। তবে একা মুম্বই নয়, এই হুমকির খবর প্রকাশ্যে আসতেই দেশজুড়ে পড়ে গিয়েছে শোরগোল।
মাত্র একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজই উসকে দিয়েছে ২০০৮ সালের সেই ভয়াবহ হামলার স্মৃতি, যে হামলায় এক লহমায় প্রাণ হারিয়েছিলেন পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ মোট ১৬৬ জন নিরীহ মানুষ।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই বাণিজ্য নগরীতে শুরু হয়েছে চিরুনি তল্লাশি। আবারও দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই মেট্রোপলিটনের হতে পারে প্রাণঘাতী হামলা সেই আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই গোটা শহর জুড়ে জারি হয়েছে হাই এলার্ট।
তার মধ্যেই জানা যাচ্ছে মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। মুম্বই পুলিশ সূত্রে খবর, পাকিস্তানের যে ফোন নম্বর থেকে মুম্বই পুলিশকে ওই মেসেজ করা হয়েছিল সেই ব্যাপারে আটক করা ব্যক্তির কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই এই ঘটনা সম্পর্কে একাধিক তথ্য সামনে আসতে পারে।
উল্লেখ্য গত সপ্তাহের শনিবার দুপুরে মুম্বই পুলিশের ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে অজ্ঞাত পরিচয় কোন ব্যক্তি একাধিক মেসেজ পাঠায়। যেখানে বলা হয়, যেখানে বলা হয়, ২৬/১১- হামলা, উদয়পুরে দরজি খুন বা পঞ্জাবে সিধু মুসেওয়ালা খুনের মতো ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে চলেছে।
ভারতে ছয় জন জঙ্গি হামলা করবে। মুম্বইয়ে এই হামলা চালানো হবে। এরপরই কার্যত নড়ে চড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় তল্লাশি অভিযান এবং শহর জুড়ে জারি হয় হাই এলার্ট। উল্লেখ্য এই ঘটনার ঠিক একদিন আগেই মুম্বইয়ের সমুদ্র তীর থেকে উদ্ধার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র বোঝাই একটি বোট।
ঠিক একইভাবে ২০০৮ সালেও এমনই একটি বোটে চড়েই মুম্বইয়ের উপর হামলা চালাতে এসেছিল একদল পাকিস্তানি জঙ্গি। ফলে সপ্তাহের শুক্রবার থেকেই শহরজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এই সমস্ত ঘটনাই এক সূত্রে বাঁধা কিনা তাও খতিয়ে দেখছে মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ। এর মধ্যেই ওই ব্যক্তির আটক হওয়ার ঘটনা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে পুলিশ প্রশাসন।
ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে শনিবার যে নম্বর থেকে মুম্বই পুলিশকে মেসেজ করা হয়েছিল সেটি একটি বিদেশি নম্বর। মূলত পাকিস্তানের কোনও ফোন নম্বর থেকেই হোয়াটসঅ্যাপে ওই মেসেজ পাঠানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান।
ইতিমধ্যেই ওই নম্বরের খোঁজ করতে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মুম্বই পুলিশ। তবে ওই নম্বরটি আদৌ বিদেশী কিনা তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। পুলিশ আধিকারিকদের একাংশের মত, কোনও উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে তদন্তকারী আধিকারিকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলে সেই বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।