অবশেষে কেটে গেলো সমস্ত আইনি জট৷ স্বীকৃতি দেওয়া হলো রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকেই৷ পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে খুলছে রাজ্যের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়৷ আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্লাস নেওয়া হবে৷ কী ভাবে ক্লাস হবে সে সম্পর্কেও নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে৷ কিন্তু স্কুল খোলা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন আইনজীবী সুদীপ ঘোষ চৌধুরী।সেই মামলার শুনানি ছিল আজ বৃহস্পতিবার৷
শুনানির শুরুতেই প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব বলেন, ৯-১২ কোনও ছাত্রের অভিভাবক আদালতে এলেন না কেন? তাঁরা যদি মনে করতেন তাঁরা অসুবিধার সম্মুখীন হবেন, তাহলে অবশ্যই আদালতের দ্বারস্থ হতেন। আপনি এই মামলা করেছেন কার স্বার্থে? অন্যদিকে, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্র নাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই আমার প্রশ্ন রয়েছে।
গত ২ বছর ধরে রাজ্যের স্কুল কলেজ গুলিতে পাঠপাঠন বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। ছাত্ররা সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ এই জনস্বার্থ মামলায় আমি আশ্চর্য৷ সিবিএসই-আইসিএসই-র পরীক্ষাও ঘোষণা হয়ে গিয়েছে৷ ছাত্রদের ঢোকা ও বেরোনোর সময় যাতে ভিড় না হয় সেই জন্য সময় বাড়ানো হয়েছে। করোনা বিধি মেনেই স্কুল হবে।
পাল্টা মামলাকারী বলেন, ‘‘আমি স্কুল বন্ধ রাখার পক্ষে নয়। আমি ছাত্রদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। অ্যাডভোকেট জেনারেলর প্রশ্ন, রাজ্যের অনেক শিক্ষক- শিক্ষিকাও স্কুল কলেজ খোলার বিরুদ্ধে। তাহলে তাঁরা কেন আদালতের দ্বারস্থ হলেন না?
শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অশিক্ষক কর্মচারীরা করোনা দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে নিয়েছেন৷ স্কুলে মাস্কের ব্যবহার ও ছাত্রদের স্বার্থের দিলে বিশেষ লক্ষ্য রাখা হচ্ছে৷ আগে স্কুল খোলা হোক৷ অভিভাবক ও শিক্ষকরা কোনও সমস্যার সম্মুখীন হলে সরকার সেইদিকে নজর রাখবে৷
স্কুল খোলা নিয়ে রাজ্যের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ক্লাস শুরুর আধ ঘণ্টা আগে পড়ুয়াদের রিপোর্ট করতে হবে৷ নবম ও একাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারে সকাল সাড়ে ৯টাটার মধ্যে স্কুলে চলে আসবে৷ ১০টা থেকে দুপুর ৩টে ৩০ পর্যন্ত তাঁদের ক্লাস হবে৷ দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে সকাল ১১টা থেকে৷ ক্লাস শেষ হবে বিকেল ৪টেয়৷ সাড়ে ১০টার মধ্যে তাঁদের স্কুলে চলে আসতে হবে৷
কিন্তু এই পড়ুয়াদের কোনও ভ্যাকসিন হয়নি। এতে অসুস্থ হওয়ায় আশঙ্কা বাড়বে। দ্রুত সংক্রমণ ছাড়াতে পারে৷ ক্লাস শুরুর আগে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে একটি কমিটি করা হোক। সেই কমিটি ঠিক করুক সময় কমিয়ে কী ভাবে স্কুল চালু রাখা যায়৷ না হলে পড়ুয়াদের জন্য ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে৷ এই মর্মে জনস্বার্থ মামলায করেন আইনজীবী সুদীপ ঘোষ চৌধুরী।
এদিন শুনানির শেষে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে দেয়৷ ফলে রাজ্যের কাছে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর জন্য স্কুল এবং কলেজ খোলায় আর কোনও বাধা রইল না৷