আচমকাই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা হলদিয়াতে। হলদিয়া তেল সংশোধনাগারে বিধ্বংসী আগুন। অগ্নিদগ্ধ হয়ে কমপক্ষে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যানের। বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন অন্তত ৪৪ জন শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে ১৭ জনকে গ্রিন করিডর করে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ তাঁদের শরীরের ৪০ থেকে ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর৷ জানা গিয়েছে, মক ড্রিলের পর নতুন করে কাজ শুরু হতেই এই দুর্ঘটনাটি ঘটে৷ এই ঘটনায় এখনও হলদিয়া পেট্রোকেমের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
ভয়াবহ দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে টুইট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি লেখেন, ‘তিনটি মূল্যবান প্রাণ হারিয়ে গেল৷ তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই৷’ মঙ্গলবার বিকেলে হলদিয়া পেট্রোকেমের আইওসি’র রিফাইনারিতে বিধ্বংসী আগুন লাগে৷ গল গল করে বেরতে থাকে কালো ধোঁয়া৷ এখনও আগুন সম্পূর্ণ ভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি৷ ওয়েল্ডিংয়ের সময় ফুলকি থেকে আগুন লাগে বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে। তবে এই ঘটনা ফের রিফাইনারির নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল৷
জানা গিয়েছে, ১ ডিসেম্বর থেকে প্লান্টে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছিল৷ ফলে উৎপাদন বন্ধ ছিল৷ বরং বিপদ এলে কী ভাবে তার মোকাবিলা করা হবে, তা বোঝাতেই চলছিল মকড্রিল৷ কিন্তু মকড্রিল শেষ হতেই নেমে এল বিপদ৷ সূত্রের খবর, প্লান্টের এক জায়গায় ঝালাইয়ের কাজ চলছিল৷ সেই সময় তরল ন্যাপথা ছিকটে পড়াতেই দাউ দাউ করে আগুন ধরে যায়৷
এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আহতদের অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছে৷ কিন্তু তাঁদের অক্সিজেন নিতেও সমস্যা হচ্ছে৷ আহত শ্রমিকদের শরীরে রাসায়নিক ঢুকে যাওয়ার জেরেই তাঁদের ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁদের ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, এত বড় দুর্ঘটনার পর ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা৷ কার গাফিলতিতে এই দুর্ঘটনা ঘটল তার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়ে বুধবার সকালে কারখানার গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন। সংগঠনের নেতা মিন্টু সামন্ত বলেন, “দুর্ঘটনায় সকল মৃত ও আহত শ্রমিক পরিবারের সমস্ত দায়দায়িত্ব নিতে হবে হলদিয়া রিফাইনারিকে। মৃত ও আহত শ্রমিকদের নামের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করতে হবে৷”