কয়েক কোটি কোটি টাকা কোনো কিছুই নাকি তার নয়, মন্তব্য পার্থর

রাজ্যে জুড়ে তোলপাড় পরিস্থিতি। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় জর্জরিত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারিত করা হয়েছে তাঁকে। ঘরে-বাইরে চাপের কারণে ধীরে ধীরে এবার মুখ খুলছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এবার এক বিস্ফোরক মন্তব্য রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের।

জানা যাচ্ছে, রবিবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় এই প্রথম টাকা প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন পার্থ। এদিন সাংবাদিকরা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে তাঁর বান্ধবীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়ার টাকা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাফ জানান, ‘কোন টাকা আমার নয়।’ এখানেই শেষ নয়, এদিন তিনি রহস্য বাড়িয়ে আরও বলেন, ‘সময় এলে সব বোঝা যাবে।’

প্রসঙ্গত এদিনও আদালতের নির্দেশে জোকা ইএসআই হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। তখনই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি এবং তাঁকে সাংবাদিকরা ‘কার টাকা’ প্রশ্ন করলে তার জবাবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই মন্তব্য করেন বলে খবর।

উল্লেখ্য রবিবার সকালে দুটি আলাদা গাড়িতে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সের ইডি দফতর থেকে পার্থ এবং অর্পিতা দুজনকেই স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য জোকার ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আগের দিনের মতো এদিনও সাংবাদিকদের দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।

তবে এদিন আর তাঁকে হুইল চেয়ারে করে নিয়ে যেতে হয়নি। কাঁদতে কাঁদতে পায়ে হেঁটেই হাসপাতালে প্রবেশ করেন অর্পিতা। বস্তুত, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুটি অভিজাত ফ্ল্যাট থেকে দুদফায় প্রায় পঞ্চাশ কোটি টাকা উদ্ধারের পর এই প্রথম টাকা প্রসঙ্গে মুখ খুললেন পার্থ।

এর আগেও যদিও তিনি জানিয়েছিলেন, যে তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার, তবে টাকা নিয়ে তাঁকে কোনও মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। অন্যদিকে এদিন ‘ষড়যন্ত্র’ প্রসঙ্গেও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। যার উত্তরে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী জানান, ‘ আমার শরীর ভালো নেই, তবে সময় এলেই সব বোঝা যাবে।’

উল্লেখ্য, রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর নাম এভাবে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়ানোয় এবং পরিশেষে তাঁরই ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধারকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্যের শাসকদল।

যদিও ইতিমধ্যেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে প্রথমে মন্ত্রিসভা এবং পরে তৃণমূল কংগ্রেসের সমস্ত দলীয় পদ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে তবুও প্রায় প্রতিদিনই বিরোধীদের জোরালো আক্রমণের মুখে পড়তে হচ্ছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীসহ শাসক দলের সমস্ত শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দদের। এমতাবস্থায় টাকা প্রসঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মুখ খোলা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ এবং তা শাসকদলের অস্বস্তি আরও কয়েকগুণ বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।