চাঞ্চল্যকর তথ্য, বিগত তিন বছরে ‘অপা’-র ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৭০০ কোটির লেনদেন

তোলপাড় পরিস্থিতি রাজ্যে জুড়ে। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় জর্জরিত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ এই শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় শুধু পার্থ চট্টোপাধ্যায় নয় নাম জড়িয়েছে পার্থ ঘনিষ্ট অর্পিতা মুখোপাধ্যায়েরও। এর পরেই তাদেরকে গ্রেফতার করেছে ইডি।  

এরপর থেকেই একের পর এক ফ্ল্যাট থেকে টাকা উদ্ধার এবং অন্যান্য একাধিক সম্পত্তির হিসেব মিলে চলেছে। প্রতিদিনই উঠে আসা একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য দক্রমশ হতবাক করেছে গোটা বঙ্গবাসীকে। এরমাঝেই, ‘অপা’-র ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট হাতে লাগলো ইডির।

২০১৬ থেকে ২০১৯ সময়ের মধ্যে পার্থ-অর্পিতা এবং তাদের কয়েকটি ব্যাঙ্ক একাউন্টে মোট ৭০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। বর্তমানে ইডির এই দাবি ঘুম উড়িয়েছে গোটা রাজ্যবাসীর।

এমনকি গত মাসেও প্রায় দেড় কোটি টাকা লেনদেন হয় এ সকল অ্যাকাউন্টে। সূত্রের খবর, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতার জয়েন্ট একাউন্ট থাকার পাশাপাশি অর্পিতার কয়েকটি নিজস্ব ব্যাঙ্ক ছাড়াও রিয়েল এস্টেট কোম্পানির একাউন্টও রয়েছে এই তালিকায়।

উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই অর্পিতার টালিগঞ্জ এবং বেলঘড়িয়া ফ্ল্যাট থেকে ৫০ কোটি নগদ অর্থ এবং একাধিক সোনা গয়না উদ্ধার করেছে ইডি। তবে উদ্ধার হওয়া অর্থের পরিমাণ যে আরো বৃদ্ধি পেতে চলেছে, সে বিষয়ে আগেই মত প্রকাশ করেছে ইডি অফিসাররা এবং বর্তমানে সন্দেহজনক ব্যাঙ্ক একাউন্টগুলি খতিয়ে দেখে তদন্তের জাল আরো গোটানোর পথে তারা।

বর্তমানে বেশ কয়েকটি একাউন্ট নজরে রয়েছে ইডির, যেখানে প্রায় প্রতিদিনই লাখ লাখ টাকা তোলা হতো বলে জানা গিয়েছ। প্রথম থেকেই ইডির অনুমান, পার্থ ও অর্পিতার এ সকল অর্থ আসলে এসএসসি দুর্নীতি মামলার সঙ্গে জড়িত, যেখানে বেআইনিভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার বদলে সকল চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হত টাকা।

এক্ষেত্রে গ্রুপ ডি ছাড়াও নবম, দশম এবং প্রাথমিক টেট দুর্নীতি মামলা জড়িত রয়েছে বলেও দাবি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার। ইতিমধ্যে এই সংক্রান্ত একাধিক তথ্য প্রমানও পেয়েছে তারা। তবে বর্তমানে আরও একটি চাঞ্চল্যকর প্রমাণ এসেছে ইডির হাতে।

সূত্রের খবর, বর্তমানে উদ্ধার হওয়া বিশাল পরিমাণ টাকা কেবলমাত্র চাকরি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নয়, এর মধ্যে এ বছর পুরসভা নির্বাচনের যোগসূত্র রয়েছে বলেও অনুমান। এক্ষেত্রে নির্বাচনে প্রার্থী করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে পার্থ চট্টোপাধ্যায় টাকা আদায় করেছিলেন বলে অভিযোগ। এমনকি, প্রতি প্রার্থী বাবদ ৩০ থেকে ৪০ লাখ পর্যন্ত তোলা হয়েছিল বলে খবর। এক্ষেত্রে সুস্পষ্ট কোন প্রমাণ পেতে তৎপর হয়ে উঠেছে ইডি এবং পরবর্তী সময় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির খোঁজ চালিয়ে নয়া কোন তথ্য সামনে উঠে আসে, সেদিকে তাকিয়ে বঙ্গবাসী।