চলতি বছরের শুরুতে শুরু হয়ে অবিরাম গতিতে চলছে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ৷ যুদ্ধের আগুনে অনবরত পুড়ে চলেছে ইউক্রেন৷ মৃত্যু ঘটেছে কয়েক লক্ষ মানুষের৷ ছয় মাস অতিক্রম করলেও যুদ্ধ থামার কোনও নাম নেই৷
এমতাবস্থায় আমেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার পরমাণু যুদ্ধ বাধলে বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাবে গোটা বিশ্ব৷ মৃত্যু হবে কমপক্ষে ৫০ কোটি মানুষের। শুধু মৃত্যুই নয়, একাধিক ভয়াবহ পরিণতির সম্মুখীন হতে হবে গোটা মানব সভ্যতাকে। এমনই দাবি করা হল আমেরিকার রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি রিপোর্টে৷
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘সামরিক অভিযান’-এর আড়ালে পুরোদস্তুর যুদ্ধ শুরু করে দেয় রাশিয়া। সেই যুদ্ধের আগুন এখনও জ্বলছে৷ বহু মানুষের প্রাণ গিয়েছে৷ বহু মানুষ আজ পড়শি দেশের শরণার্থী৷ আর ঘটনাচক্রে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সঙ্গে পরোক্ষ ভাবে জড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ আমেরিকা।
এই প্রেক্ষিত-ই উস্কে দিয়েছে রাশিয়ার সঙ্গে আমেরিকার পরমাণু যুদ্ধের সম্ভাবনা৷ যা নিয়ে গবেষণা শুরু করে নিউ জার্সির রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁদের গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আমেরিকা ও রাশিয়ার যুদ্ধ বাধলে কমপক্ষে ৫০ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে৷ ভয়াবহ পরিণতির মুখে পড়তে হবে আপামর মানব সভ্যতাকে।
পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহারে বায়ুমণ্ডলে তৈরি হতে পারে একটি অস্পষ্ট আস্তরণ। যাতে বাধা পাবে সূর্যের কিরণ। ভয়ঙ্কর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষি। পুরোপুরি বদল চলে আসতে পারে সামগ্রিক কৃষি ব্যবস্থায়। পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্ফোরণ হলে তাতে তৈরি হবে অগ্নিঝড়৷
রাটগার্সের গবেষকরা যুদ্ধের সম্ভাব্য ছ’টি পরিণতি নিয়ে গবেষণা চালিয়ে বলছেন, রাশিয়া-আমেরিকার পুরোদস্তুর পরমাণু যুদ্ধের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পরিণতি হবে মৃত্যু৷ বিশ্বের অর্ধেক মানুষের মৃত্যু হতে পারে। এমনকি তুলনামূলক ভাবে ছোট সংঘাতও খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করতে পারে৷
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যদি তুলনামবলক ছোট কোনও যুদ্ধও বেধে যায়, তা হলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কৃষি ফলন আনুমানিক ৭ শতাংশ হারে হ্রাস পাবে। আর আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে পুরোদস্তুর পরমাণু যুদ্ধ বাধলে আগামী তিন থেকে চার বছরের মধ্যে ফলন ৯০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পাবে৷ এমনটাই দাবি গবেষকদের।