‘জন্মভূমি’র ডাকসাইটের সেই পিসিমাকে মনে পরে? এখন কোন পরিস্থিতিতে আছেন অভিনেত্রী?

মিতা চট্টোপাধ্যায় ছিলেন বাংলার স্বর্ণযুগের অভিনেত্রী। থিয়েটার থেকে সিনেমা–সব ক্ষেত্রেই অগাধ বিচরণ তাঁর। বয়সের ভারে বাড়িতেই থাকছেন অধিকাংশ সময়। কিন্তু বার্ধক্য তাঁকে একবিন্দুও টলাতে পারেনি। ৯২ বছর বয়সে তাঁর অফুরান জীবনীশক্তি তরুণ-তরুণীদের নতুন করে বেঁচে থাকার সাহস জোগায়। অভিনেত্রীর নাম মিতা চট্টোপাধ্যায়। টালিগঞ্জের মুর অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে থাকেন মিতা চট্টোপাধ্যায়। পরিবার থাকে সঙ্গে।  ৯২ বছর বয়সে এসে এখন আর ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে চান না মিতা। তিনি শেষ অভিনয় করেছিলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় অভিনীত ‘কিয়া অ্যান্ড কসমস’ ছবিতে। ‘ত্রিনয়নী’ ধারাবাহিকে তাঁকে শেষবার দেখেছিলেন ছোটপর্দার দর্শক।

গতবছর ‘ঘরের বায়োস্কপ’-এ এসেছিলেন মিতা চট্টোপাধ্যায়। শাড়ি পরে, কাঁধে আঁচল ফেলে গেট দিয়ে ঢোকার সময় তাঁর সহকর্মী অভিনেতা-অভিনেত্রীরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে চিৎকার করে ওঠেন তাঁকে দেখে। জড়িয়ে ধরেন মিতাকে।  তাঁর অদম্য প্রাণশক্তি কতখানি স্পর্শ করে তাঁর অনুজদের। হলের মধ্যে ঢোকার সময় গায়ক রূপম ইসলামের গানের ছন্দে কোমর দুলিয়ে দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে নেচেছিলেন মিতা। বয়স তখন তাঁর ৯১।

মিতা ৯২ বছর বয়সে এসে নিজের বার্ধক্যকে কখনওই সামনে আনেন না। বলেন, “আমার বয়স যে ৯২, সেটা বারবার বলিসনি, আমি চাই না লোকে জানুক আমার টলমল অবস্থা। আমার বয়স ৯২ হয়েছে তো কী। আভি তো ম্যায় জওয়ান হু।” সত্যিই তিনি জওয়ান। ক্যামেরার সামনে সেভাবে আর না এসে দাঁড়ালেও, হাজাররকম কাজের মধ্যে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন মিতাদেবী। তাঁর প্রিয় কাজ কবিতা লেখা, ছড়া লেখা, বই লেখা। অনেক ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন মিতা। খাওয়া-দাওয়া নিয়মমাফিক চলে। ঈশ্বরে ভক্তি আছে বলে নিয়মিত পুজোটাও করেন। মঙ্গলবার, বৃহস্পতিবার, শনিবার এলেই তিনি ভীষণ ব্যস্ত। ঠাকুর ঘরেই এটা-সেটা করে বেলা গড়িয়ে যায় তাঁর। আর বাকি সময়টা কাটে লেখালেখি করে।