করোনা সংক্রমণের মাঝেই বাড়ছে নতুন চিন্তা

চলতি বছর শুরুর দিক থেকেই ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে এসেছে করোনা সংক্রমণ৷ এর মধ্যে ফের মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে সংক্রমণ৷ এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে চতুর্থ ঢেউ এসে গিয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ ভারতেও ফের বাড়ছে প্রকোপ৷ রাজধানী দিল্লিতে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে৷ এই অবস্থায় আগাম সতর্ক থাকাটাই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মত বিশেষজ্ঞদের৷ 

এরই মধ্যে আবহাওয়ার বদলে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন৷ জ্বর আসছে৷ সঙ্গে রয়েছে সর্দি-কাশি৷ যা দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে৷ তবে ভয় পেলে চলবে না৷ বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আশিস মিত্রের কথায়, নানা কারণে শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মৃদু থেকে মাঝারি জ্বর আসছে। জ্বর আসলেই সতর্ক থাকতে হবে৷ তবেই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে৷ 

ডা. আশিস মিত্র জানিয়েছেন, নতুন করে জ্বরের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়েছে৷ তবে বেশিভাগ সময়েই জ্বর থাকছে মোটামুটি ১০০ ফারেনহাইটের আশপাশে। এই ধরণের লক্ষণ দেখে অনেকেই করোনার ভয় পাচ্ছেন। মৃদু থেকে মাঝারি জ্বরের পিছনে করোনা ভাইরাস থাকতেই পারে। আবার অন্য অনেক কারণেও জ্বর আসতে। তাই অহেতুক ভয় নয়৷ 

চিকিৎসকের কথায়, করোনার ঘাতক রূপ অনেকটাই কমেছে৷ এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জ্বরের পাশাপাশি সর্দি, কাশি, গায়ে ব্যথা, গলা ব্যথা, মাথা ব্যথা, পায়খানা, বমি ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। তবে জ্বর কিন্তু খুব বেশি বড়ছে না৷ মোটামুটি ১০০-র আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দ্রুত সমস্যা থেকে মুক্তিও মিলছে৷ ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে রোগী সুস্থ হয়ে উঠছেন৷ 

ডা. মিত্রের কথায়, জ্বর মানেই কিন্তু করোনা নয়৷ ফি বথর আমরা দেখি, ঋতু পরিবর্তনের সময় ইনফ্লুয়েঞ্জা ও প্যারাইনফ্লুয়েঞ্জার মতো ভাইরাস সক্রিয় হয়ে উঠছে। এর ফলে সাধারণ জ্বর, সর্দি-কাশিও কিন্তু হতে পারে। পাশাপাশি এই সম টাইফয়েডও হয়৷ এছাড়া কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এলে তা ম্যালেরিয়ার লক্ষণও হতে পারে। তাই জ্বর এলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত৷ কারণ সাধারণ মানুষের পক্ষে জ্বরের প্রকৃত কারণ নির্ণয় করা সম্ভব নয়৷ 

এ প্রসঙ্গে, আর জি কর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. জ্যোতির্ময় পাল বলেন, জ্বর হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে৷ তবে প্রথম ধাপেই করোনা টেস্ট করার প্রয়োজন নেই। কারণ আমাদের রাজ্যে এই মুহূর্তে করোনা দাপট সেভাবে নেই৷ হালকা জ্বর থাকলে মোটামুটি ২ দিন দেখা যেতে পারে৷ তারপরেও জ্বর না কমলে অবশ্যই করোনা টেস্ট করিয়ে নেওয়া উচিত৷ সেই সঙ্গে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতে হবে৷ তাঁর পরামর্শ, এই অবস্থায় সকলকে সতর্ক থাকতে হবে৷ মাস্ক পরা, নির্দিষ্ট সময় অন্তর হাত ধোয়ার মতো করোনা বিধি মেনে চলতে হবে৷ শ্বাসকষ্ট থাকলে বাড়িতে ফেলে রাখা চলবে না বলেও সতর্ক করেছেন তিনি৷