আরজি কর কেলেঙ্কারি নিয়ে গর্জে উঠেছিল কলকাতার তিন প্রধান। মোহনবাগান-ইস্ট বেঙ্গল ভক্তরা যুব ভারতীতে ডার্বি বাতিল হওয়ার পরে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। তারা স্লোগান দিতে থাকে ‘দুই গ্যালারী এক স্বর, জাস্টিস ফর আরজি কোর’। সে সময় একটি ছবি ব্যাপক ভাইরাল হয়। একজন ইস্টবেঙ্গল সমর্থককে মোহবাগান সমর্থকের কাঁধে চড়ে প্রতিবাদের গর্জন বাড়াতে দেখা যায়। কলকাতা ময়দানে প্রতিবাদের ভিন্ন ভাষা তৈরি করেছে এই ছবি। এরপরই মোহন-পূর্ব ভক্তদের এই ছবি ভাইরাল হয়ে যায় নেট দুনিয়ায়। এরপর সবাই জানতে চেয়েছিলেন কে এই মোহনবাগান ভক্ত যিনি কাঁধে ইস্টবেঙ্গল ফ্যান বয়ে নিয়েছিলেন। জানা গিয়েছে, মোহনবাগানের সমর্থকের নাম শিলাদিত্য ব্যানার্জি। এরপর সবাই এই ছবির পেছনের আসল কাহিনী জানতে চায়। আসলে কি ঘটেছিল সেই সময়? এক সংবাদমাধ্যমে শিলাদিত্য বলছিলেন, ‘বিক্ষোভ করতে গিয়ে এক পুরুষ পুলিশ আমার স্ত্রীকে লাঠিচার্জ করেছে। আমি কাঁদলাম। ওঁকে বলি, আপনি নিজেও জানেন যে, আপনি ভুল করছেন। আমাদের প্রতিবাদ তো নিজেদের স্বার্থে নয়, আপনারও দিদি-বোনের জন্য। মোহনবাগানের পতাকা ধরে কাঁদছিলাম’। এই প্রতিবাদ নিয়ে নিয়ে তিনি বলেন, ‘মেরিনার্স বেস ক্যাম্প আলট্রাসের সদস্য আমি। আমার পরনে হয়তো মোহনবাগানের জার্সি ছিল। কিন্তু হৃদয়ে ছিল ন্যায়বিচারের দাবি’।
এর পরে, শিলাদিত্য ব্যানার্জী বলেন, “সে সময় মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা আলাদা জটলা করে প্রতিবাদ করছিল। হঠাৎ আমার মনে হলো, কেন ইস্টবেঙ্গল ফ্যানরা আমার কাঁধে উঠে জোরে জোরে স্লোগান দিচ্ছে না? সেই ভাবনা থেকেই ইস্টবেঙ্গল ফ্যানকে কাঁধে তুলে নিয়েছেন। আমি তাকে চিনতামও না। পরে, আমাদের ছবি ভাইরাল হওয়ার পরে, আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানতে পারি যে ইস্টবেঙ্গল ভক্তের নাম রোহন গুহ। আমাকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে। আমিও মেনে নিয়েছি।
শিলাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি যেখানে থাকি, সেটি পূর্ববঙ্গের ডেরা। কিন্তু কখনো অসম্মান করেননি। ছোটবেলা থেকেই সবার প্রিয়। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরাও সবসময় এটি পছন্দ করে। সেখান থেকে হয়তো প্রতিবাদ কর্মসূচির সময় ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের কাঁধে তুলে নিয়েছি। মোহনবাগানের ভক্ত শিলাদিত্য খুব বেশি ঝগড়া করতে চান না। তিনি বলেন, ‘আমি নায়কের মতো কিছুই করিনি। মানুষের যা করা উচিত আমি তাই করেছি’। সেদিনের ঘটনায় শিলাদিত্য ব্যানার্জী গভীরভাবে আহত হয়েছিলেন। তিনি বলেন, অনেক দিন ধরেই দেখছি, সবকিছুই রাজনীতির রঙে রাঙানো। আমি এই ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এর সঙ্গে রাজনীতি করা উচিত নয়। আমি মনে করি সবার প্রতিবাদ করা উচিত। আমরা কারো বিরুদ্ধে নই। শুধু বিচার চাই। গতকাল যারা গেছে তারা সবাই নিরস্ত্র। সারা বছর খেলা দেখতে মাঠে যান। আমি তাদের অধিকাংশকেই চিনি। আমার চোখের সামনে গতকাল এক বৃদ্ধকেও পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। এর চেয়ে খারাপ আর কিছু হতে পারে না।