এই মুহূর্তে রাজ্যে উত্তাল পরিস্থিতি শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে। একের পর এক নাম জড়িত হচ্ছে এই মামলায়। উঠে আসছে নতুন নতুন তথ্য। এই সব নিয়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই বেশ চাপে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে টানাপোড়েন চলছেই, এরই মাঝে অন্য এক মন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে নিয়ে টানাটানা। গতপরশুই জানা গিয়েছিল, ট্রেনে করে কলকাতা আসার সময়ে তিনি এবং তাঁর মেয়ে ‘গায়েব’ হয়ে গিয়েছিলেন। গতকাল নির্দিষ্ট সময়ে তিনি সিবিআই তলবে সাড়াও দেননি প্রথমে। কিন্তু কী ভাবে তাঁর ‘কীর্তি’ সামনে এল? কে সকলের সামনে সবকিছুর পর্দা ফাঁস করল? আসলে এক নারী আছেন এই সবের পিছনে।
ববিতা সরকার। হ্যাঁ, এই সেই মহিলা যার কারণে আজ রাজ্যের মন্ত্রীর পরেশ অধিকারীর এই পরিস্থিতি। এসএসসি-র যে মেধাতালিকায় মন্ত্রিকন্যা অঙ্কিতার নাম শীর্ষে ছিল সেই তালিকা থেকে তাঁর চেয়ে বেশি নম্বর পেয়েও ছিটকে গিয়েছিলেন তিনি! ভাবতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি বলে দাবি ববিতার। তিনি জানিয়েছেন, মন্ত্রীর কন্যার থেকে তিনি ১৬ নম্বর বেশি পেয়েছিলেন, কিন্তু তবুও তাঁর নাম ওই তালিকায় ২১ নম্বরে ছিল, আর পরেশের কন্যার নাম ছিল শীর্ষে। ববিতা আরও জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে স্কুল শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা দেওয়ার পর যখন ২০১৭ সালে তালিকা প্রকাশ পায় তখন তিনি প্রথম ২০-তে ছিলেন। কিন্তু সেই তালিকা বাতিল করে এসএসসি। পরে নয়া তালিকায় শীর্ষে ছিল পরেশ কন্যার নাম, কিন্তু ববিতার নাম চলে যায় ওয়েটিং লিস্টে।
প্রথমে তিনি জানতেন না যে অঙ্কিতা অধিকারী কে। পরে সেটা জানতে পারায় আরও কঠিন হয় ববিতার লড়াই। কিন্তু হাল তিনি ছাড়েননি। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ, এসএসসি ধর্না মঞ্চ, সবেতেই অংশ নিয়েছেন ববিতা। বৈবাহিক দায়িত্ব, দুই সন্তান সামলানোর পাশাপাশি নিজের অধিকারের জন্য লড়াই চালিয়েছেন তিনি। আরটিআই করেও জানতে চেয়েছেন তাঁর এবং অঙ্কিতার নম্বর কত। লাভ হয়নি। পরে পরেশ অধিকারী রাজ্যের মন্ত্রী হয়ে যাওয়ায় লড়াই আরও কঠিন হয় তাঁর। কিন্তু এখন আশার আলো দেখছেন ববিতা।