চলতি মাসেই চারদিনের সফরে বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চলেছেন মমতা

রাজ্যজুড়ে আলোচনা তুঙ্গে। রাজ্যে জুড়ে তোলপাড় পরিস্থিতি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় কাণ্ডে তাঁর সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এই আবহে নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চলতি মাসেই চার দিনের সফরে দিল্লি যাচ্ছেন, ঘোষিত হয়েছে পূর্বেই।

আগামী সপ্তাহে শুরু হচ্ছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফর। জানা যাচ্ছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যভাগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি পাড়ি দিচ্ছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত বর্তমান আবহে মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি সফর রাজনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এর সঙ্গেই খবর, দিল্লি সফরেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী দেশের আরও চার বিরোধী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গেও আলাদা করে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহের শনিবার তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও ওরফে কেসিআর, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের সঙ্গে সাক্ষাতের সম্ভবনা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এই বৈঠকের আলোচ্য বিষয় হতে পারে সিবিআই এবং ইডির মত কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলিকে কেন্দ্রের অন্যায়ভাবে বিরোধীদের বিরুদ্ধে যথেচ্ছ ব্যবহার করার চেষ্টা।

জানা যাচ্ছে, কেন্দ্র যেভাবে বিরোধীদের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এই সমস্ত গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করছে সেই বিষয়টিকে জনমানসের তুলে ধরতে এই বৈঠকে চার বিরোধী মুখ্যমন্ত্রী নতুন রণকৌশল তৈরি করতে পারেন।

তবে এখানেই শেষ নয়, জানা যাচ্ছে রাজধানীতে যাওয়ার পর কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রসঙ্গত এর আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতবারই দিল্লি সফরে গিয়েছেন প্রতিবারই তিনি কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাতের সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন প্রথম দিনেই।

কয়েক মাস আগেই সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি কার্যত রেগে গিয়ে উত্তর দেন, ‘সংবিধানে কোথাও কি লেখা রয়েছে যে দিল্লিতে এলেই সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করতে হবে?’ ফলে স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে কংগ্রেসের মধ্যেকার যে দূরত্ব সেই ছবিই বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। তবে বর্তমানে চিত্রটা কিছুটা পাল্টেছে।

সম্প্রতি বিজেপি সদস্যরা কংগ্রেস সভানেত্রীকে সংসদে হেনস্তা করলে তৃণমূলের সাংসদরাই সবার আগে সোনিয়ার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। ফলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, আগের থেকে অনেকটাই শুধরেছে সোনিয়া তথা কংগ্রেসের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক। মূলত সেই কারণেই মমতার আগামী দিল্লি সফরে তাঁর সঙ্গে সোনিয়ার সাক্ষাতের একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।