বড় রকম আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। জ্বালানি সংকট দূর করতে ভারতের পর এবার রাশিয়ার দ্বারস্থ হল আর্থিক অনটনের জর্জরিত প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কা। জানা যাচ্ছে সম্প্রতি জ্বালানি সংকট মেটাতে পুতিনের শরণাপন্ন হয়েছেন লঙ্কান প্রেসিডেন্ট।
শ্রীলঙ্কার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের দাবি, ইতিমধ্যেই শ্রীলঙ্কার জ্বালানির সংকট দূর করতে রাশিয়া থেকে প্রয়োজনীয় তেল আমদানি ইস্যুতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর। উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে তীব্র জ্বালানি সংকটে জ্বলছে শ্রীলঙ্কা।
প্রায় দেউলিয়া এই দেশের জ্বালানি মন্ত্রী দিন দুয়েক আগেই জানিয়েছিলেন, এই মুহূর্তে দেশে যে পরিমাণ পেট্রোল মজুদ রয়েছে তা দু-একদিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। সেই সংকট দূর করতেই এবার রাশিয়ার দ্বারস্থ হয়েছিলেন গোতাবায়া রাজাপক্ষে।
এদিন পুতিনের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট এক টুইট বার্তায় আরও জানিয়েছেন, ‘জ্বালানি আমদানির জন্য রাশিয়ার নেতার কাছে ক্রেডিট সহায়তার প্রস্তাবের অনুরোধ করেছি।’ তাছাড়া মস্কো ও কলম্বোর মধ্যে পুনরায় ফ্লাইট চালুর বিষয়ে অনুরোধ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। গত মাসে রাশিয়ার এয়ারলাইনস এরোফ্লট এই পরিষেবা বন্ধ করেছে বলে খবর।
এদিকে অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া শ্রীলঙ্কায় এবার সুদের হার বাড়ানো হয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও চাহিদা নিয়ন্ত্রণে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জানা গিয়েছে, ঋণের বিপরীতে সুদের হার ১০০ পয়েন্টভিত্তিতে বাড়িয়ে ১৫.৫ শতাংশ করা হয়েছে। আর আমানতের বিপরীতে সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪.৪ শতাংশ, যা গত ২১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে এখনও পর্যন্ত সব থেকে বড় অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। জ্বালানি থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্য এমনকি নিত্য প্রয়োজনীয় ওষুধেরও ঘাটতি দেখা দিয়েছে এই দেশে। সামান্য দুবেলার খাবার জোগাড় করতেই রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন দেশের সাধারণ নাগরিকরা।
পর্যাপ্ত জ্বালানির অভাবে সারাদিনের অধিকাংশ সময়ই বন্ধ রাখা হচ্ছে বিদ্যুৎ পরিষেবা। জ্বালানি বাঁচাতে ইতিমধ্যেই শ্রীলঙ্কার সমস্ত অফিস আদালত বন্ধ হয়েছে। এমনকি কয়েক লক্ষ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অন্ধকার করে স্কুল কলেজের দরজাও সাময়িকভাবে জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।