করোনা সংক্রমণের কারণে শুরু হয়েছিল অনলাইন পরীক্ষা। কিন্তু এই মহুর্তে সংক্রমনের অতিমারী পরিস্থিতি কিছুটা শিথিল হওয়ায় অনলাইন পরীক্ষা বন্ধ করে অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছে অফলাইনে পরীক্ষা হবে। কিন্তু পড়ুয়াদের একাংশ সেই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ। অনলাইন পরীক্ষা নিতে হবে। এই দাবিতে আরও একবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজের ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান, আন্দোলন শুরু করল পড়ুয়াদের একাংশ। যতক্ষণ না তাদের দাবি মানা হবে, এই আন্দোলন চলবে। একথাই বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে। ভ্যাপসা গরমে পড়ুয়ারা রাস্তায় বসে বিক্ষোভ করছেন। অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে স্লোগান উঠেছে।
চলতি মাসের ৩ তারিখ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবারে ষষ্ঠ সেমিস্টারের পরীক্ষা অফলাইনে হবে। অর্থাৎ পরীক্ষার্থীরা অন্য কলেজে গিয়ে পরীক্ষা দেবেন। বাড়িতে বসে অনলাইনে পরীক্ষা দেওয়া হবে না। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কলেজগুলির অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল এই বিষয়ে। একাধিকবার হওয়া বৈঠকে বরাবর অধ্যক্ষরা অফলাইন পরীক্ষার দিকে মত দিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও অফলাইন পরীক্ষার পক্ষে মত দেন। তবে পড়ুয়াদের একাংশ বরাবর দাবি জানাচ্ছিল অনলাইন পরীক্ষা নিতে হবে। প্রস্তুতির সময় তারা অত্যন্ত কম পেয়েছে।
কলেজে কয়েক মাস মাত্র ক্লাস হয়েছে। এর মধ্যে এত পরিমাণ পড়া শেষ করা সম্ভব নয়। শুধু তাই নয়, এতগুলো সেমেস্টার অনলাইন পরীক্ষা হয়েছে। শেষ সেমেস্টার পরীক্ষাটিও অনলাইন হতে হবে। অন্যদিকে অধ্যক্ষদের দাবি করোনা আবহ কেটে যাওয়ার পর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের খুলেছে। বেশ কয়েক মাস ধরে নিয়মিত ক্লাস চলেছে। সিলেবাস শেষ হয়েছে অনেক বিষয়ের। কাজেই অনলাইন পরীক্ষা নেওয়ার কোনও অর্থ নেই। সবদিক বিবেচনা করেই অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অফলাইন পরীক্ষার দিনক্ষণ ঘোষণা করেনি এখনও। মনে করা হচ্ছে, জুন মাসের শেষ সপ্তাহে অফলাইন পরীক্ষা হবে। ইতিমধ্যেই কলেজগুলি এডমিট কার্ড বিষয়ে সব কিছু স্থির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পড়ুয়াদের একাংশ কিছুতেই এই অফলাইন পরীক্ষার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না। তারা ফের আন্দোলনে বসেছেন। সোমবার থেকে তারা অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে সরব হয়েছেন। কলেজের ক্যাম্পাসের মূল গেটের সামনে তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
গ্রাজুয়েশন ও মাস্টার্স- এর পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন পরীক্ষা নিচ্ছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন পরীক্ষা নিচ্ছে। তাহলে কেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন পরীক্ষা নিতে পারবে না? এই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। শিক্ষা নিয়ে প্রহসন করা হচ্ছে। এই ধরনের পোস্টারিংও চলছে। যতক্ষণ না তাদের দাবি মানা হবে, পড়ুয়ারা একইভাবে আন্দোলন করবে এই জায়গায়। এ কথা বলা হচ্ছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে রাস্তার একদিকে গার্ডেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। সেখানেই বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা আন্দোলন করছেন। যানজট যাতে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখছে পুলিশ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এই খবর লেখা পর্যন্ত কোনও বক্তব্য রাখা হয়নি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরছে না। এই কথা পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আগেই। ৩ তারিখ গত শুক্রবার পড়ুয়াদের বিক্ষোভ চলেছিল কলেজের ক্যাম্পাসের সামনে। পুলিশ প্রেসিডেন্সি কলেজের রাস্তার ধারের গেটের অংশটি ঘিরে রেখেছিল। সেখান থেকেই অধ্যক্ষরা ও অন্যান্যরা যাতায়াত করেছেন। উপাচার্য, সহ উপাচার্যও সেই রাস্তা দিয়ে বেরিয়েছেন। পড়ুয়াদের ওই রাস্তায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি।