বাংলার পর এবার দেশের আরো এক রাজ্যে তৎপরতা বাড়লো সিবিআইয়ের। এবার বিহারে তৎপর সিবিআই৷ বুধবার নীতীশ কুমারের মহাগাটবন্ধন জোট আস্থা ভোটের মুখোমুখি হওয়ার আগেই রাজ্যজুড়ে হানা দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা৷
চাকরির আশ্বাস দিয়ে জমি হাতানো মামলার তদন্তে নেমে জোট সরকারের বৃহত্তম দল আরজেডির একাধিক নেতার বাড়ি ও দফতরে তল্লাশি অভিযান চালাল সিবিআই। বিজেপি ছেড়ে নীতীশ কুমার হাতে লন্ঠন নিতেই হুঁশিয়ারি এসেছিল৷
গেরুয়া নেতারা বলেছিলেন, নীতীশ যে চোর-ডাকাতদের হাত ধরেছেন, তা শীঘ্রই বুঝতে পারবেন। অচিরেই লালুপুত্র তেজস্বীকে জেলে যেতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা সুশীল মোদী। নতুন সরকারের যাত্রা শুরুর দশ দিন যেতে না যেতেই ইডি-সিবিআই হানা বিজেপি বিরোধী জোট শরিকের ঘরে৷ এই ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে দাবি করেছে বিরোধীরা৷
সিবিআই সূত্রে খবর, লালুপ্রসাদের আরজেডি’র রাজ্যসভা সাংসদ আশফাক করিম, বিধান পরিষদের সদস্য তথা দলের কোষাধক্ষ্য সুনীল সিং এবং বিধান পরিষদের প্রাক্তন সদস্য সুবোধ রাইয়ের ঠিকানায় তল্লাশি চালানো হয়। জমির বিনিময়ে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় গত জুলাই মাসেই গ্রেফতার করা হয় লালু-ঘনিষ্ঠ ভোলা যাদবকে৷
লালুপ্রসাদ যাদব তখন প্রথম ইউপিএ সরকারের রেলমন্ত্রী৷ সালটা ২০০৪ থেকে ’০৯৷ অভিযোগ, তাঁর আমলে বিহারের বহু যুবককে জমির বিনিময়ে রেলের ‘গ্রুপ-ডি’ পদে নিয়োগ করা হয়৷ এই ঘটনায় লালু-পত্নী তথা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবী এবং তাঁদের দুই কন্যা মিসা এবং হেমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এই ঘটনার তদন্তে গত ২০ মে পটনা, দিল্লি-সহ দেশের মোট ১৫টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায় সিবিআই৷
এদিন, রাষ্ট্রীয় জনতা দলের মোট পাঁচ নেতার বাড়িতে হানা দেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। আরজেডি-কে আর্থিক সহায়তা দেন এমন একজন বড় মাপের ব্যবসায়ীর বাড়িতেও পৌঁছে যান তদন্তকারী অফিসাররা৷ এছাড়াও আরজেডির দুই রাজ্যসভার সাংসদ এবং একজন প্রাক্তন বিধায়কের বাড়িতে তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
অন্যদিকে, গুরুগ্রামে মল তৈরির একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতেও হানা দেয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ইডি। সেটি তেজস্বী যাদবের বেনামি কোম্পানি বলে অনুমান৷ খাতায় কলমে যিনি কোম্পানির মালিক, তাঁর খোঁজ মেলেনি। তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন বলেই অনুমান ইডির৷ দিনভর সিবিআই-ইডি হানার নিয়ে আরজেডি নেতা সুনীল সিং বলেন, ‘‘উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে এটা করা হচ্ছে। বিজেপি ভাবছে, সিবিআই-এর ভয়ে আরজেডি বিধায়করা আস্থাভোটে ওদের ভোট দেবে। তেমনটা হওয়ার নয়৷’’