বিফলে গেল সমস্ত প্রচেষ্টা। অবশেষে আর গ্রেফতারি এড়াতে পারলেন না৷ অসুস্থতার দোহাই দিয়েও আর রক্ষে হলো না, গরু পাচার মামলায় চৌদ্দ দিনের জন্য সিবিআই-এর হেফাজতে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো উত্তাল রাজ্য রাজনীতি।
অন্যদিকে অনুব্রত মণ্ডল গ্রেপ্তার হতেই নড়েচড়ে বসেছেন বীরভূমের একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং ব্যবসায়ীরা। কারণ জানা যাচ্ছে ইতিমধ্যেই, অনুব্রত এবং তাঁর প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের সম্পত্তির উৎস খুঁজতেই সামনে এসেছে একাধিক নাম।
প্রসঙ্গত, গরুপাচার কাণ্ডে বীরভূমে অনুব্রতর গ্রেফতারের শুরুটাই হয়েছিল এই প্রাক্তন দেহরক্ষীকে কেন্দ্র করে। এরপর দিন কয়েক আগে বীরভূমের নামকরা এক পাথর ব্যবসায়ী টুলু মন্ডলের বাড়িতেও হানা দেন ইমপোর্টমেন্ট ডিরেক্টরেটেড আধিকারিকরা।
পরিশেষে বৃহস্পতিবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারি। সূত্রের খবর, এরপরেই নড়েচড়ে বসেছেন অনুব্রত ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতা-ব্যবসায়ী। কারণ অনুব্রত, টুলুর পর এবার সিবিআই আধিকারিকদের নজর যে তাদের উপরেই পড়তে চলেছে তা এক প্রকার স্পষ্ট।
জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের সন্দেহের তালিকায় রয়েছে বোলপুর পুরসভার এক কাউন্সিলর। ঘটনাচক্রে তিনিও আবার অনুব্রতর খুব কাছের মানুষ। তাঁরও নামে বেনামে প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে বলে খবর।
এছাড়াও বীরভূম জেলার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের কর্ণধার তথা অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ বন্ধুর দিকেও নজর রয়েছে সিবিআইয়ের। তদন্তকারীদের সন্দেহ ওই মেডিকেল কলেজেও বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদেন হয়েছে অনুব্রতের।
এমনকি ওই মেডিকেল কলেজের মালিকানা সংক্রান্ত বিষয় নিয়েও উঠছে একাধিক প্রশ্ন। এছাড়াও বোলপুরসহ বীরভূম জেলার বেশ কয়েকজন বড় এবং মাঝারি ব্যবসায়ীর উপরেও নজর রাখছে সিবিআই। বাদ যাচ্ছেন না অনুব্রতর বর্তমান নিরাপত্তারক্ষীরাও। তাদের কয়েকজনের উপরেও কড়া নজর রয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। তখনই গরু পাচার কাণ্ডে নাম জড়ায় ওই পাথর ব্যবসায়ী টুলুর। এরপরেই টুলুর বাড়িতে হানা দেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা। সায়গলের সূত্র ধরে ইডি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল করিম খানের বাড়িতেও হানা দিয়েছিল বলে খবর। তবে জানা যাচ্ছে অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারের পর এই তালিকা ক্রমশ লম্বা হচ্ছে। সামনে আসছে একাধিক নাম। তাঁদেরকেই আগামী দিনে তদন্তের কাজে লাগাতে চলেছে সিবিআই।