প্রতিনিয়ত একটু একটু করে চিন্তা বাড়ছে বাড়তে থাকা করোনা পরিস্থিতি নিয়ে। আবার আগের জায়গায় ফিরতে পারে করোনা পরিস্থিতি। প্রতিদিন আগের দিনের তুলনায় বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এই আবহেই আবার দিন কয়েক বাদে চার কেন্দ্রে পুর নির্বাচন। কী ভাবে এই পরিস্থিতিতে ভোট হবে তা নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। যদিও নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছে যে, কড়া নিয়ম অনুযায়ী পুরভোট সম্পন্ন হবে। কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ এই ভোট বয়কটের দাবি তুলেছে। কড়া বার্তা দিয়ে বলা হয়েছে, ভয়ঙ্কর কোভিড পরিস্থিতিতে অবিলম্বে আসন্ন সমস্ত পৌরসভা নির্বাচন প্রক্রিয়া বন্ধ ঘোষণা করতে হবে, না হলে ভোট কর্মীগণ ভোট প্রক্রিয়া বয়কট করতে বাধ্য হবেন।
এই সংগঠনের স্পষ্ট বক্তব্য, প্রতিদিন ভয়ঙ্কর ভাবে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বাংলায়! সর্বস্তরে যখন ব্যাপক সতর্কতার কথা বলা হচ্ছে, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠন পাঠন বন্ধ করা হয়েছে, অফিস-আদালতে ৫০ শতাংশ হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেখানে কী করে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগমের মধ্য দিয়ে পৌরসভার ভোট প্রক্রিয়া চলতে পারে? সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তাদের কথায়, ভোট তো মানুষের জন্য। মানুষকে বিপদে ফেলবার জন্য সচেতন ভাবে যদি এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় তাহলে তাকে ধিক্কার জানাতে হয়। এই প্রেক্ষিতেই ভোট কর্মীদের নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে তারা বলেছে, এই ভোটের ফলে হাজার হাজার ভোটকর্মী নিজেরা আক্রান্ত হবেন এবং তার দ্বারা তাঁদের পরিবার সহ সর্বত্র আরো দ্রুত এই আক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে।
শুধু ভোট কর্মী নয়, ভোটারদের বিপুল জমায়েত, সভা-সমাবেশ ইত্যাদি প্রক্রিয়া পরিস্থিতিকে আরো ভয়ঙ্কর দিকে নিয়ে যাবে। তাই শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার সহ সমস্ত সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের কাছে দাবি জানান হয়েছে যাতে অবিলম্বে এই ভোট প্রক্রিয়া এবং গঙ্গাসাগর মেলাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে হাজার-হাজার, লক্ষ-লক্ষ মানুষের সমাগম এখনই বন্ধ ঘোষণা করা হয় বলেও দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী৷
কিন্তু আপাতত এই বিষয়গুলিতে আলোকপাত করেনি রাজ্য এবং কমিশন। তারা দুজনেই এখনও এই সিদ্ধান্তেই অনড়। তাই এই সংগঠন হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে যে তাদের দাবি যদি মানা না হয় তাহলে তারা সমস্ত ভোট কর্মী এবং ভোটারদের কাছে আহ্বান জানাবেন যাতে তারা এই ভোট প্রক্রিয়ায় যুক্ত না হয়ে তা বয়কট করেন। তাদের স্পষ্ট দাবি, রাজ্যে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগে পঠন-পাঠন শুরু হোক তারপর ভোট, মেলা ইত্যাদি সম্পন্ন হবে। তার আগে নয়।