আচমকাই এক দুর্ঘটনায় সমাপ্তি হলো এক বীরের জীবন৷ ভয়ঙ্কর চপার দুর্ঘটনায় প্রয়াত চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত৷ মৃত্যু হয়েছে তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াতেরও৷ বায়ুসেনা সূত্রে খবর৷ বুধবার দুপুরে ১২টা ৪০ নাগাদ তামিলনাড়ুর কুন্নুরে নীলগিরির চা বাগানে ভেঙে পড়ে এমআই-১৭৷ ওই কপ্টারে মোট ১৪ জন সওয়ার ছিলেন৷ তাঁর মধ্যে ১৩ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বায়ুসেনা৷ মৃতদেহগুলি শনাক্ত করতে ডিএনএ টেস্ট করা হচ্ছে৷ এদিন সস্ত্রীক সুলুর থেকে কুন্নুরে যাচ্ছিলেন জেনারেল রাওয়াত৷ মাটি ছুতেই তাতে দাউ দাউ করে আগুন লেগে যায়৷ স্থানীয় বাসিন্দারাই দগ্ধ অফিসারদের উদ্ধার করে নিয়ে যান৷ পরে বায়ুসেনার তরফে জানানো হয়, চপার দুর্ঘটনায় যে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁর মধ্যে রয়েছেন জেনারেল বিপিল রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত৷
১৯৭৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর গোর্খা রাইফেলসের পঞ্চম ব্যাটেলিয়নের যোগ দিয়েছিলেন বিপিন রাওয়াত৷ উল্লেখ্য বিষয় হল, তাঁরা বাবাও ছিলেন এই ব্যাটেলিয়নেরই সদস্য৷ হাই অলটিটিউডে শত্রু মোকাবিলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর৷ কর্মজীবনের ১০ বছর জঙ্গিবিরোধী অভিযানে অতিবাহিত করেছেন৷ তিনি ছিলেন জঙ্গি দমনে সিদ্ধহস্ত৷ পাকিস্তানে সার্জিকাল স্ট্রাইকের অন্যতম কাণ্ডারী৷ জম্মু-কাশ্মীরের উরির একটি কোম্পানির মেজরও ছিলেন তিনি৷ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পূর্ব সেক্টরে ১১ গোর্খা রাইফেলসকে কমান্ড করেছিলেন রাওয়াত৷
২০১৬ সালে তিনি সেনাপ্রধান হন৷ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ হন জেনারেল রাওয়াত৷ এর ঠিক দু’বছরের মাথায় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল সিডিএস-এর৷ ভারতীয় সেনাবাহিনীর চার দশকের কেরিয়ারে নানা কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁকে৷ সেই সকল ধাপ পেরিয়ে তিনি উঠে এসেছিলেন ভারতীয় সেনার সর্বোচ্চ পদে৷ দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতীয় বাহিনীর বিভিন্ন সংস্কার তিনি করেছিলেন৷ সেনাকে আরও আধুনিক করার চেষ্টা করেছেন৷ সেই সিডিএস-এর মর্মান্তিক মৃত্যু হল চপার দুর্ঘটনায়৷ এই ঘটনায় সেনাবাহিনীতে শোকের ছায়া৷