শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে বিবাদ রাজ্য কেন্দ্রের মাঝে৷ কেন্দ্রের শিক্ষানীতি মানতে নারাজ৷ নিজস্ব শিক্ষানীতি তৈরির উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার৷ নয়া শিক্ষা নীতি তৈরি করতে ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ সুগত বসু, সুরঞ্জন দাস, নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ি সহ ১০ জনের এই কমিটির নেতৃত্বে থাকছেন গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক৷ কমিটিতে রাখা হয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতিকেও৷
শিক্ষানীতি নিয়ে এখন তুঙ্গে কেন্দ্র-রাজ্য তরজা৷ সম্প্রতি শিক্ষানীতিতে যে বদল আনা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে রাজ্য৷ ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্র ও কেরল সরকার নিজস্ব শিক্ষানীতি তৈরি করেছে৷ এবার সে পথে হাঁটল বাংলাও৷ কেন্দ্রের নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন একের পর এক গাইডলাইন পাঠিয়ে চলেছে৷ সে সকল গাইডলাইন মানা হবে কিনা, তা নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধোঁয়াশার মধ্যে ছিল৷ সেই ধোঁয়াশা কাটিয়ে এবার নিজস্ব শিক্ষনীতি তৈরির কথা ঘোষণা করল রাজ্য৷ তবে এ বিষয়ে গঠিত কমিটি এখনও কোনও বৈঠক করেনি৷ জানা গিয়েছে, কেন্দ্রের গাইডলাইন খতিয়ে দেখার পরেই পৃথক শিক্ষানীতি গঠন করবে রাজ্য৷
এ প্রসঙ্গে কমিটির অন্যতম সদস্য তথা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ি বলেন, ‘‘আমাদের মনে হয়েছে কেন্দ্রের শিক্ষানীতি আমেরিকার শিক্ষানীতির অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে৷ ১৩০ কোটির দেশে সম্ভবত এই অনুকরণ কার্যকরী নয়৷ জাতীয় শিক্ষানীতির যে যে অংশে অনুকরণের প্রবণতা দেখা গিয়েছে, সেই সকল অংশের বিরোধিতা করছে রাজ্য৷’’ অপর এক শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি আমার কাছেও খুব একটা গ্রহণযোগ্য নয়৷ এর আগেও কেন্দ্রের শিক্ষানীতির সমালোচনা করেছিলেন তিনি৷ পবিত্র সরকার মনে করেন, রাজ্য তার নিজস্ব শিক্ষানীতি তৈরি করতেই পারে৷ কারণ শিক্ষা বিষয়টি কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়ের দায়িত্ব৷
এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দাবি, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার রাজ্যের উপর জাতীয় শিক্ষানীতি চাপিয়ে দিতে চাইছে। যা মানা সম্ভব নয়৷ শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, কেন্দ্রের ফতোয়া মানা হবে না। দ্রুত রাজ্যের নয়া শিক্ষানীতি ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, দু’মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে কমিটি৷ সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই তৈরি হবে রাজ্যের শিক্ষানীতি৷ ব্রাত্য আরও বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তাঁর অনুমতি ও নির্দেশ মতোই এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার একতরফা ভাবে রাজ্যের উপর জাতীয় শিক্ষানীতির ভার চাপিয়ে দিতে চাইছে। আমরা এই ধরনের ফতোয়া মানি না। বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েই আমরা রাজ্যের শিক্ষানীতি ঘোষণা করব।’