তুষারপাতের সম্ভাবনার পূর্বাভাস, সমতলে রয়েছে বৃষ্টির ভ্রূকুটি

বদলে যাওয়া আবহাওয়ায় হঠাৎই ভিড় সান্দাকফু, ফালুটে। বছর শেষে ফের তুষারে মুড়বে পাহাড়চূড়া, এই আশায় পর্যটকদের ঢল। তুষারপাতের সম্ভাবনার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তরও। যেমন সমতলে রয়েছে বৃষ্টির ভ্রূকুটি। বৃষ্টি বা তুষারপাত কতটা হবে, তা অবশ্য নির্ভর করছে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রকৃতির মতিগতির ওপর। তবে নতুন বছরকে যে কুয়াশায় মুড়ে স্বাগত জানাবে উত্তরবঙ্গ, তা নিশ্চিতভাবে বলে দেওয়া যায়। রোদের ঝিলিক উধাও হতেই বিকেলে মেঘের আনাগোনা শুরু। শিলিগুড়ি থেকে কোচবিহার, সমতলের একাধিক জায়গাতেই হালকা মেঘের আস্তরণ। পাহাড়ে অবশ্য দুপুরের পর থেকেই মেঘ জমছিল। সঙ্গে উত্তুরে হাওয়ার দাপট। সময়ে সময়ে পারদ পতন। সকালে দার্জিলিংয়ের রাজভবনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যেখানে ছিল ১.৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড, সন্ধ্যার পর তা নেমে যায় ১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের নীচে। ফলে ক’দিন আগেও ম্যালে বা চৌরাস্তায় যেখানে রাত ৯টাতেও পর্যটকদের ভিড় দেখা যেত, শনিবার তা সন্ধের পর থেকেই শুনসান। হোটেলবন্দি পর্যটকরা তুষারপাতের প্রতীক্ষায়।

আবহাওয়ার বদলে ঠান্ডা লেগেছে পাহাড়িয়াদেরও। তাই সন্ধ্যাতেই রাস্তায় রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে চারপাশে ভিড় জমিয়েছেন স্থানীয়রা। চক বাজার, জাকির হুসেন রোড, ম্যালের আশপাশেও উষ্ণতার ছোঁয়া নিতে দেখা গিয়েছে অনেককে। দার্জিলিং পাহাড় যখন তুষারপাতের প্রতীক্ষায়, তখন এদিন দফায় দফায় তুষারপাত হয়েছে সিকিমে। ছাংগু, নাথু লা, লাচেন, বাবামন্দির সহ একাধিক জায়গায় ভারী তুষারপাত হওয়ায় রাস্তাগুলি পর্যন্ত বরফে ঢেকে যায়। সিকিম-পরিস্থিতির আঁচ লেগেছে কালিম্পং পাহাড়েও। এখানেও পারদ পতন ঘটেছে রাতে। যথারীতি পাহাড়ে গিয়ে শীতের আমেজ নিতে পারছেন পর্যটকরা।

হাওয়া বদল ঘটছে সমতলেও। মূলত ডুয়ার্স অঞ্চলে শনিবার রাতে জাঁকিয়ে শীত অনুভূত হয়েছে পাহাড়ি হাওয়ায়। দু’দিনের মধ্যে সমতলের বাকি অংশেও শীতের ঝাপটা লাগার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, ৩০ ডিসেম্বর থেকে টানা তিনদিন কুয়াশায় মোড়া থাকবে উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জেলা। অর্থাৎ সূর্যের তেজে ঘাম ঝরার গত কয়েকদিনের পরিস্থিতি দূর হবে। পরিবর্তে পরিস্থিতি হবে পিকনিকের, উৎসব উদযাপনের। ভারী কুয়াশার জন্য আবহাওয়া দপ্তরের তরফে সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ার সম্ভাবনায় গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে সতর্কতার কথা বলছেন আবহবিদরা। কিন্তু হঠাৎ এমন হাওয়া বদল কেন? আবহাওয়া দপ্তরের সিকিমের কেন্দ্রীয় অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলছেন, ‘শুক্রবার বিকেলের পর একটি শক্তিশালী পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রবেশ ঘটেছে সিকিম পাহাড়ে। ঝঞ্ঝাটির শক্তি বৃদ্ধিতে আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটছে। কুয়াশার পাশাপাশি বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটি এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।’