মেয়ের কাজকর্ম নিয়ে আক্ষেপের সুর অর্পিতার মায়ের

এই মুহূর্তে রাজ্যে জুড়ে তোলপাড় পরিস্থিতি। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় জর্জরিত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের একের পর এক ফ্লাট থেকে উদ্ধার হচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

মেয়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে টাকার পাহাড়৷ বিপুল সোনা গয়না, বিদেশি মুদ্রা, দামী গাড়ি আর বিলাসবহুল ফ্ল্যাট জুড়ে বৈভবের ছোঁয়া৷ অথচ তাঁর মা থাকেন নিতান্তই সাদামাটা ভাবে৷ স্বামীর পেনশনের টাকায় জীবন চলে তাঁর৷ কিন্তু মেয়ের কুকর্মের আঁচ যে তাঁর গায়েও লেগেছে৷

বার বার প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকেও৷ হানা দিয়েছে ইডি৷ চলেছে জিজ্ঞাসাবাদ৷ কিন্তু, কাতর স্বরেই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের মা মিনতি মুখোপাধ্যায় জানালেন, ‘‘মেয়ের কোনও অর্থ ভোগ করিনি’’৷ বরং মেয়ের ফ্ল্যাটে থরে থরে সাজানো টাকা দেখে তিনি হতবাক৷ মেয়ের যে দুটি-তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে, সেই খবরটুকুও জানা ছিল না তাঁর৷ 

এই পরিস্থিতিতে মিনতিদেবীর ভরসা বড় মেয়ে৷ তাঁর কথায়, ‘‘এর আগেও অর্পিতার লাইফ স্টাইল দেখে সতর্ক করেছি৷ কিন্তু, লাভ হয়নি৷’’ তিনি বলেন, ‘‘যতটুকু জেনেছি সবটাই সংবাদমাধ্যম থেকে৷ দোষী প্রমাণিত হলে সাজা হোক৷’’ তবে মেয়েকে নিয়ে বারংবার প্রশ্নের মুখে পড়ে কার্যত বিধ্বস্ত তিনি৷

ক্ষোভের সুরেই মিনতিদেবী বলেন, “মেয়ের কাছে যে পরিমাণ টাকা রয়েছে শুনতে পাচ্ছি, তা আমার কাছে থাকলে বা ভোগ করলে আজ আমিও বিরাট অট্টালিকায় থাকতে পারতাম। আমাকে দেখে কি মনে হচ্ছে?’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘হাতে একটা লোহা পরতাম। সেটা ভেঙে যাওয়ায় একটা নতুন লোহার চুড়ি কিনেছি। আমার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে কিছুই পায়নি ইডি। আমার কাছে লুকানোর কিছু নেই। যা আছে সবটাই সবার সামনে। কোথাও তালা দেওয়ার নেই।” মেয়ের কাণ্ডে রীতিমতো ভেঙে পড়েছেন মা মিনতি।

কাতর গলায় তিনি বলেন, “ছেলে মেয়ের কর্মের ফল মা-বাবাকে তো ভুগতেই হয়। আমাকেও ভোগ করতে হবে। আর কী করব!” মিনতিদেবী এও বলেন, “সত্যিটা সামনে আসার প্রয়োজন৷ যদি এর সঙ্গে কোনও মন্ত্রী যুক্ত থাকে তাহলে তাঁরও শাস্তি হোক।”