বিগত দু বছরের বেশি সময় ধরে গোটা দেশে তান্ডব চালিয়েছে করোনা সংক্রমণ। এই কোভিড পরিস্থিতির কারণে প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পরে গতকাল থেকে রাজ্যে শুরু হওয়া প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক স্কুলগুলিতে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতির হার গড়ে ৬৫ শতাংশর বেশি ছিল বলে বিদ্যালয় শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। গতকাল প্রথম দিনে রাজ্যের মোট ৫০ হাজার ২৬৩ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭৩.৩৩ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত ছিল। অন্যদিকে, উচ্চ প্রাথমিকে ১৩ হাজার ৪৭৫ টি বিদ্যালয়ে ছাত্র ছাত্রীদের উপস্থিতির হার ছিল ৬০.৭৩ শতাংশ।
২০২০ সালের ১৬ মার্চ শেষ স্কুল হয়৷ এর পর করোনা সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে লাগু হয় লকডাউন৷ বন্ধ হয়ে যায় স্কুল। ২০২১-এর ১২ ফেব্রুয়ারি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু করে রাজ্য সরকার৷ কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় কা বন্ধ হয়ে যায়৷ সেই সময়ে গ্রীষ্মের ছুটি ঘোষণা করে দেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তৃতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা সামলে রাজ্যে কোভিড সংক্রমণ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তাই আর দেরী না করে খুলে দেওয়া হল স্কুল৷ কোভিড বিধি মেনেই পড়ুয়ারা স্কুলে গিয়ে পঠনপাঠন শুরু করেছে। গত কয়েক দিন ধরে চলেছে প্রস্তুতি পর্ব। কী ভাবে করোনাবিধি মেনে পড়ুয়াদের ক্লাস করানো যায়, সেই ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। স্কুল পরিষ্কার থেকে স্যানিটাইজেশন- সবটাই চলেছে জোরকদমে। শিক্ষক, শিক্ষিকারা ২ ফেব্রুয়ারি থেকেই স্কুলে যাচ্ছেন৷ আগে আলাদা করে ভাগ ভাগ করে ক্লাস নেওয়া হচ্ছিল, এবার তা হচ্ছে না।
আসলে সাম্প্রতিক অনেক রিপোর্টে দেখা গিয়েছিল যে, রাজ্যের শিক্ষার মান এবং হার দুইই পড়ে গিয়েছে লাগাতার স্কুল বন্ধ থাকার কারণে। বহু পড়ুয়া অক্ষর চিনতে পারছে না, বাক্য গঠন করতে পারছে না। এমনকি পঞ্চম বা অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণির অঙ্ক সমাধান করতেও অনেকাংশে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই দ্রুত স্কুল খোলার দাবি বাড়ছিল।