সাইবার প্রতারণার শিকার শিলিগুড়ির বাসিন্দা

সাইবার প্রতারণার টাকা উদ্ধার করে ফের বড়সড় সাফল্য পেল শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ। প্রতারণার প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হল পুলিশ।

উল্লেখ্য,গত ১৯শে আগস্ট রাতে শিলিগুড়ির হায়দার পাড়ার বাসিন্দা নন্দেশ্বর ঠাকুরের কাছে একটি হোয়াটসঅ্যাপে কল আসে। যে কলের মধ্যে দিয়ে তাকে বলা হয় মুম্বাই পুলিশ থেকে কথা বলা হচ্ছে এবং তার নামে এক অভিযোগ রয়েছে।মূলত নন্দেশ্বর ঠাকুরের আধার কার্ড সহ বেশ কিছু নথিপত্র ও ব্যাংক ডিটেলস এর মধ্য দিয়ে প্রায় মোটা অংকের মাদক কেনা বেচা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। যার ফলে ইতিমধ্যেই তার নামে মুম্বাই কোর্টে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজ করা হয়েছে বলে জানানো হয়। সেই হোয়াটসঅ্যাপে কলে অবিলম্বে যদি জরিমানার অংক না জমা করা হয় তাহলে মুম্বাই পুলিশ এসে তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাবে বলে বলা হয়। এই কথা শোনামাত্রই হায়দার পাড়ার ওই বাসিন্দা ঘাবড়ে যান। কেননা তিনি একজন অবসর প্রাপ্ত খুবই সাধারণ মানুষ।

এত রাতে হোয়াটসঅ্যাপ কলে পুলিশের ডিপি দেওয়া ফোন আসায় যথারীতি তিনি প্রচণ্ড ভীত হন।কিছু বুঝে না ওঠার আগেই তাকে জোরপূর্বক সেই জরিমানার অংক তড়িঘড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলতে থাকা হয় সেই হোয়াটসঅ্যাপে কলের মধ্য দিয়ে। তিনি ঘাবড়ে গিয়ে সেই জরিমানার অংক দিয়েও দেন। তবে পরের দিন অর্থাৎ কুড়ি আগস্ট সম্পূর্ণ বিষয়টি বুঝে ওঠার পর নন্দেশ্বর ঠাকুর নামক সেই ভদ্রলোক তার নিজস্ব সাইবার বিশেষজ্ঞ আইনজীবী প্রদীপ পান্ডার কাছে গিয়ে সমস্ত কিছু খুলে জানান।একথা জানা মাত্রই সাইবার বিশেষজ্ঞ আইনজীবী প্রদীপ পান্ডা সরাসরি সেই ভদ্রলোককে সঙ্গে নিয়ে পৌঁছে যান শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম পিএসএ এবং লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।এরপরেই শুরু হয় তদন্ত প্রক্রিয়া। সমস্ত রকম নথিপত্র সাইবারে জমা করেন সেই ভদ্রলোক। দীর্ঘ প্রায় কুড়ি দিন চলে তদন্ত। অবশেষে সোমবার সেই ২৫লক্ষ টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয় শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ।

এদিন এক সাংবাদিক বৈঠকের মধ্য দিয়ে ডিসিপি (ইস্ট) দীপক সরকার গোটা ঘটনার বিষয়বস্তু তুলে ধরেন এবং পরে সাইবার বিশেষজ্ঞ আইনজীবী প্রদীপ পান্ডা এই বিষয়ে আলোকপাত করেন। অন্যদিকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নন্দেশ্বর ঠাকুর সমস্ত বিষয় জানান এবং ২৫লক্ষ টাকা ফিরে পেয়ে ধন্যবাদ জানান আইনজীবী প্রদীপ পান্ডা এবং শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগকে। অন্যদিকে ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে আরো কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন অথবা কারা এই সমস্ত সাইবার প্রতারণার সাথে জড়িত তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।এছাড়াও সাধারণ মানুষকে আরো সচেতন হওয়ার অনুরোধ করেন ডিসিপি দীপক সরকার।