স্কুল বন্ধ নিয়ে দায়ের হলো মামলা

প্রচন্ড গরমে পুড়ছিল দক্ষিণবঙ্গ বিশেষত কলকাতা। এই পরিস্থিতিতে বাড়িয়ে দেওয়া হয় স্কুলের ছুটি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী, শিক্ষা দফতর আজ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত ৪৫ দিনের গ্রীষ্মের ছুটির নির্দেশিকা জারি করেছে। এই দীর্ঘ ছুটির প্রতিবাদ করে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে গত ২৮ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা সচিবেরর নিকট তা পুণর্বিবেচনার দাবি করা হয়। কিন্তু পুনর্বিবেচনার ব্যাপারে সরকারের কোনও রূপ সাড়া না পাওয়া যাওয়ায় আজ বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হাণ্ডা কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন।

তিনি বলেন, এপ্রিল মাসে কয়েক দিন ধরে রাজ্যে তাপ প্রবাহ চলেছিল একথা ঠিক। সে জন্য শিক্ষামন্ত্রী পর্যালোচনা করেছিলেন এবং সর্বত্র সকালে স্কুল চালু হয়েছিল। এ সপ্তাহে পরবর্তী পর্যালোচনার ঘোষণা করা হয়েছিল। আরও বলা হয়েছিল ছুটি দেওয়ার ক্ষেত্রে করোনায় দীর্ঘ ২ বছর স্কুল বন্ধ থাকার জন্য পড়াশোনার ক্ষতির বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে। কিন্তু এসব বিবেচনা না করেই হঠাৎ করে দীর্ঘ ছুটির ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর যুক্তি, আবহবিদেরাও মে মাসের প্রথম সপ্তাহে আবহাওয়া পরিবর্তনের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন এবং বর্তমানে কয়েক দিনের ঝড়বৃষ্টিতে তা প্রমাণিতও হয়েছে। উত্তর বঙ্গের জেলাগুলোতে তাপমাত্রা তখন এতটাই কম ছিল যে শিশুদের সোয়েটার পরে স্কুল আসতেও দেখা গিয়েছে। তাছাড়া দীর্ঘ ৪৫ দিন কখনও এ ধরনের দাবদাহ থাকে না। তাই এই ছুটি অযৌক্তিক।

বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে আগামী ৫ মে উক্ত দাবিতে কলেজ স্কোয়ারের বিদ্যাসাগর মূর্তির পাদদেশে সারাদিন ব্যাপী অবস্থান আন্দোলনের কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, সরকার শিক্ষার কোন স্তরেই শিক্ষক সংগঠন বা বিশেষজ্ঞদের মতামত নেয়নি। এই দীর্ঘ ছুটি দেওয়ার শিক্ষামন্ত্রীর পর্যালোচনাও মুল্যহীন। সেই সঙ্গে তাদের আরও অভিযোগ, শিক্ষার বেসরকারিকরণের পথ মসৃণ করবার জন্যই সরকার বার বার ছুটি দিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সরকারি শিক্ষার প্রতি অনীহা সৃষ্টি করতে চাইছে।